শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৩

মতবিরোধ সত্ত্বেও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে চাই ইসলামপন্থীদের ঐক্য


শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

মতবিরোধ সত্ত্বেও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে চাই ইসলামপন্থীদের ঐক্য


মতবিরোধ সত্ত্বেও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে  চাই ইসলামপন্থীদের ঐক্য
মুহাম্মদ আমিনুল হক

যখন থেকেই এই জগত্ সংসার শুরু তখন থেকেই শুরু মতের অমিল বা চিন্তার ভিন্নতা। আল্লাহ যখন চাইলেন এই দুনিয়ায় মানুষ প্রেরণ করবেন তখন ফেরেশতারা দ্বিমত পোষণ করে বসলেন এই বলে যে, হে খোদা! আমরাই তো তোমার ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য যথেষ্ট, আবার মানুষ কেন? আদমপুত্র হাবিল-কাবিলের মধ্যে চিন্তার অমিল ছিল। বিয়ের প্রশ্নে হজরত আদমের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তারা। সেই পুরনো যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষে মানুষে মতবিরোধ চলে আসছে। এই মতপার্থক্য অবধারিত। এর থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। বলা হয়, ‘মৃতরা মতবিরোধ করে না, যেখানে জীবন আছে সেখানে মতদ্বৈধতা আছে।’
আল্লাহতায়ালা আমাদের বহু রূপে, বহু গুণে সৃষ্টি করেছেন। এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির মধ্যে অনেক ব্যবধান রেখেছেন। সেই ব্যবধান চিন্তার, সেই ব্যবধান রুচিবোধ ও মননের। কিন্তু তারপরও তিনি আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন আমাদের স্বার্থেই। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে ঐক্যবদ্ধভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (সুরা আল ইমরান : ১০৩)। অথচ আমাদের মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশ এখন অশান্তির সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ জাতীয় অনৈক্য। দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছি আমরা। একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। অনৈক্য তো চোখে পড়ার মতো। আলেম-উলামা, দল-মত নির্বিশেষে সবার এই অনৈক্যকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছে ইসলামবিরোধী অপশক্তি। তারা ইংরেজদের নীতি ‘উরারফব ধহফ জঁষব্থ তথা ‘বিচ্ছিন্ন করে শাসন করো’কে গ্রহণ করে আমাদের তছনছ করে দিচ্ছে। আজ আল্লাহকে গালি দেয়া হচ্ছে। গালি দেয়া হচ্ছে আমাদের প্রিয় রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে। রাসুলের সহধর্মিণীদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে অশ্লীল কায়দায়। কোরআন, হাদিস, মসজিদ, মাদরাসা, ইসলামি রাজনীতি, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে বিদায় করার সব আয়োজন আজ সম্পন্ন। এককথায়, তাওহিদপন্থী মুসলমানের বিরুদ্ধে বাতেল শক্তি আজ একাট্টা।
এদেশের ইসলামপন্থী শক্তির এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। এদেশে ইসলামের পতাকা উড্ডীন রাখতে হলে সবাইকে আজ একতার শপথ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কীভাবে হবে এই ঐক্য? এ বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে আমরা সুন্দর একটি তত্তের সন্ধান পেয়েছি। সেই তত্ত্বটি হচ্ছে, ‘আল-ইত্তেহাদ মায়াল ইখতেলাফ’ তথা ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’। এই তত্ত্বটির কথা এ দেশে প্রথম উচ্চারণ করেছিলেন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা আযীযুর রহমান নেছারাবাদী কায়েদ সাহেব হুজুর (র.)। ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য‘র তত্ত্বটি বাস্তব রূপ দিতে তিনি এদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরেছেন। ছারছীনা, চরমোনাই, ফুরফুরা, জৌনপুরী, বায়তুশ শরফ, আটরশি, মাইজভান্ডার, তাবলীগ, জামায়াতে ইসলামীসহ অসংখ্য পীরের দরবার এবং দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী ইসলামি শক্তিকে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর এই ঐক্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালে (ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ও উহার পথ, পৃ. ০৩)। হজরত কায়েদ সাহেব হুজুর (র.) ঐক্যের যে রূপরেখা তুলে ধরেছেন অতি সংক্ষেপে তা হচ্ছে, দেশ-জাতি ও রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সব আস্তিক্যবাদী শক্তির ঐক্য, ইসলামবিরোধী তত্পরতার বিরুদ্ধে সব আলেম-উলামার ঐক্য। ভণ্ড ও জালিম নির্মূলেও সবার মধ্যে সাধারণ ঐক্য হতে পারে। এই ঐক্য হবে ইস্যুভিত্তিক। ইস্যুভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে গিয়ে কোনো দল বা মতকে তার নিজস্ব কর্মসূচি বাদ দিতে হবে না।
যুগে যুগে ইস্যুভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন যে সফলতার মুখ দেখেছে তার প্রমাণও আমরা পেয়েছি। ঈমান, ঐক্য ও শৃঙ্খলা—এ ত্রিনীতির ভিত্তিতে সংগঠিত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলেই পাকিস্তান অর্জন হয়েছিল। ১৯৫১ সালে করাচিতে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে সর্বদলীয় উলামা ও মাশায়েখ সম্মেলনে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন বলেই পাকিস্তানের ২২ দফা মূলনীতি রচনা করা সম্ভব হয়েছিল।
আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আলেমদের ঐক্য প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখেছে। ভারত সরকার যখন মুসলমানদের পারিবারিক বিধি-বিধান পরিবর্তন করতে চাইলো তখন বিশ্ববিখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা আবুল হাসান আলী আন-নাদভীর (র.) নেতৃত্বে ভারতের সব শ্রেণীর উলামা ও ইসলামি গ্রুপ একই প্লাটফর্মে এসে ‘অষষ ওহফরধ গঁংষরস খধ িইড়ধত্ফ্থ গঠন করে। যেখানে বেরলভী সুন্নী, দেওবন্দী, আহলে হাদিস এমনকি শিয়া মতাদর্শের আলেমরাও যুক্ত হয়ে সমগ্র ইন্ডিয়ার সাধারণ মুসলমানদের স্বার্থে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়ে সফল হয়েছেন। ইন্ডিয়ার সরকার মুসলমানদের ব্যাপারে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে এই ননগভর্নমেন্ট সংগঠনের মতামত নিতে হয়। পারভেজ মোশাররফ সরকারের আমলেও সমগ্র পাকিস্তানে আলেমদের ঐক্য সাধিত হয়েছিল। পাকিস্তানের ইসলামী সংগঠন জমিয়াতুল উলামার আমির মাওলানা ফজলুর রহমান সেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রধান ছিলেন। যেখানে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা অন্যান্য দল অন্তর্ভুক্ত হয়ে পার্লামেন্টে শক্ত ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছিল। সেই আমলে পাকিস্তান সরকার মাদরাসা শিক্ষা সংস্কারের নামে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিলে তাও আলেমরা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করেন। সেই প্রতিরোধ আন্দোলনে বেরলভী গ্রুপ, আহলে হাদিস গ্রুপ, দেওবন্দী গ্রুপ এবং শিয়া গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত মাদরাসাগুলোর বোর্ড ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপকে প্রতিহত করে। ২০১০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাক সংসদ, সরকার ও জনগণকে ‘ঙহব গধষধুংরধ্থ তথা এক মালয়েশিয়া কনসেপ্টকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়ে সবাইকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ২০১০ সালে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয় ‘ওয়ান মালয়েশিয়া’ কনসেপ্টকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ‘ওয়ান মালয়েশিয়া’ কনসেপ্ট সেদেশে যাদুর মতো কাজ করে। জাতি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে নেমে পড়ে। ‘আরব বসন্ত’ নামে খ্যাত মিসর ও তিউনিসিয়ার বিপ্লবের পেছনেও রয়েছে সব ইসলামি সংগঠন ও আলেম-উলামার ইস্যুভিত্তিক ঐক্যের বিশাল অবদান। আরব দেশের বর্তমান ইসলামী সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ‘না‘মালু ফি মা ইত্তাফাকস্ফনা ওয়া নাসকুতু আম্মা ইখতালাফনা’ অর্থাত্ আমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ের মিল আছে সেগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে করব আর যেসব বিষয়ে ইখতেলাফ আছে সে বিষয়ে চুপ থাকব, কেউ কারো সমালোচনা করব না।
বাংলাদেশে নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা আহমদ শফী আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই আহ্বানও যাদুর মতো কাজ করেছে। অপ্রতিরোধ্য শাহবাগিরা আত্মসমর্পণ করেছে চট্টগ্রামের তাওহিদী জনতার কাছে। অতএব নির্দ্বিধায় বলা যায়, ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’ একটি ফলপ্রসূ আন্দোলনের নাম। যেখানে সব মতের লোকজন তাদের নিজস্ব মত ও পথকে আঁকড়ে ধরে মুসলিম উম্মাহর মৌলিক ইস্যু কিংবা দেশ-জাতির প্রধান ইস্যুতে ঐক্য গড়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। এই ঐক্য হতে পারে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সব আস্তিকের, দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে কিংবা ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সব ইসলামপন্থীদের।
এদেশে তাবলিগ জামাত বিশাল একটি শক্তি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবস্থানও বেশ শক্ত। ইসলামি আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ অন্য ইসলামি দলগুলোরও কমবেশি শক্তি আছে। সব মিলিয়ে কওমী ধারার আলেম-উলামার প্রভাব খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তেমনিভাবে ছারছীনা, ফুরফুরা, চরমোনাই, ফুলতলী, জৌনপুরীসহ সুফী ধারার বিভিন্ন আধ্যাত্মিক দরবারের প্রভাবও রয়েছে দেশজুড়ে। সব ইসলামি দল ও পীর সাহেবরা যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, এদেশে কোনো কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন পাস হতে দেয়া হবে না, আল্লাহ, রাসুল ও সাহাবীদের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না এবং কোনো ইসলামি দল কিংবা আলেমের ওপর নির্যাতন সহ্য করা হবে না তাহলে তা অবশ্যই সম্ভব। ইসলামবিরোধী তত্পরতা মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। কিয়ামত পর্যন্ত মতের পার্থক্য থাকবে। আমাদের উচিত এই মতপার্থক্যকে সঙ্গে নিয়েই মৌলিক বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। মনে রাখবেন, ঐক্যবদ্ধ শক্তি যত ক্ষুদ্র হোক তার বিজয় আসন্ন এবং বিচ্ছিন্ন শক্তি যত বড়ই হোক না কেন, তার পরাজয় নিশ্চিত। আল্লাহ আমাদের এ সত্যটুকু বোঝার তৌফিক দিন। আমিন!
লেখক : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও কলামিস্ট

দ্বীনের নবির কত অপমান আর সইব আমরা !


দ্বীনের নবির কত অপমান আর সইব আমরা !

দ্বীনের নবীর কত অপমান আর সইব আমরা ? আর কত শোনাবো আমরা তাঁকে  গালী ? কত মুরতাদের কত গালা গালের পর আমাদের ঘুম  ভাঙ্গবে ? কত জঘন্য ভাষায় ইসলাম,মুসলমান ও তাঁর নবীকে গালাগাল করলে আমরা জেগে উঠবো ? বন্ধুরা জবাব দাও।
বল বন্ধুরা-এই কি ইসলাম ? এই কি মুসলমান ? এই কি আমাদের ধর্ম ? এই কি  শিখিয়েছিলেন আমাদের প্রিয় নবী সঃ আমাদেরকে ? এ জন্যই কি তিনি তায়েফের   ময়দানে রক্ত ঢেলেছিলেন, অহুদের ময়দানে দাঁত ভেঙ্গে ছিলেন আমাদের জন্য ? আর এজন্যই কি নবী দৌহিত্রের রক্তে রক্তাক্ত হয়েছিল কারবালার ময়দান ?
বন্ধুরা আমার! আর ঘুমিওনা ! এবার জাগো , তোমার হাতে ধরি- পায়ে পড়ি এবার জাগো । আমার জন্য না, কারো চিৎকার চেচামেচির জন্যও না, কোনও ধন সম্পদ, নারীর লোভেও না- এবার জাগো তুমি ইসলামের জন্য , তোমার দাত ভাঙ্গা চির দুখী এতিম নবীর জন্য , দোজাহানের মুক্তির একমাত্র সংবিধান কুরানের জন্য জাগো।  
জবাব দাও বন্ধু, কি হবে এই জীবন রেখে যদি চোখের সামনে দ্বীনের নবিকে মুরতাদ- লম্পটের মুখে গালী শুনতে হয় ? কি হবে এই জীবন রেখে যদি দ্বীনের নবী মুহাম্মদকে- মহাম্মক(মহা+আহাম্মক)বলা হয় ? কি হবে এই জীবন রেখে যদি সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মহামানব  হযরত মুহাম্মদ সঃকে মহাউম্মাদ(মহা+উম্মাদ)বলে ব্যাঙ্গ করা হয় ? আর কিইবা হবে এই জীবন রেখে যদি মহা পবিত্র আল কুরআনকে চোখের সামনে ছুড়ে ফেলা হয়, জ্বালিয়ে দেয়া হয় ?
বন্ধু ! যদি সত্যি তুমি মুসলিম হয়ে থাক, কোনও মুসলিম মায়ের রক্ত যদি তোমার দেহে থাকে, দ্বীনের নবী মুহাম্মদের উম্মত বলে যদি তুমি দাবীদার হয়ে থাক, এক আল্লাহয় যদি তুমি বিশ্বাসী হয়ে থাকো তাহলে তোমাকে  আবারও বলব- তোমার যা আছে তাই নিয়ে তুমি জেগে ওঠো , ঝাঁপিয়ে পড়ো জাতির কলঙ্ক, দেশের কলঙ্ক ওই সব মুরতাদ কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সন্তান হয়েও যারা তোমার  দ্বীনের বিরুদ্ধে, দ্বীনের নবীর বিরুদ্ধে,কুরানের  বিরুদ্ধে , ইসলামের  বিরুদ্ধে  তাদের সর্বশক্তি নিয়ে হিংস্রপশুর  ন্যায় ঝাপিয়ে পরেছে।


মহানবী হজরত মোহাম্মদ স. সম্পর্কে ধর্মদ্রোহী ও নাস্তিক কুত্তা রাজিবের জঘন্য  বিষোদ্গার
     আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন দয়া করে এই লেখাটা পড়ুন ও শেয়ার করুন

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে মত প্রকাশের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে ওঠা ব্লগকে একশ্রেণীর যুবক ইসলামের বিরুদ্ধে কুত্সা রটনার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ধর্মদ্রোহী ও নাস্তিক যুবগোষ্ঠী মহান আল্লাহ, পবিত্র গ্রন্থ কোরআন, মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.), ঈদ, নামায, রোজা ও হজ সম্পর্কে জঘন্য ভাষায় বিষোদ্গার করে মুসলমানদের ইমান-আকীদায় আঘাত হানছে। তাদের কুিসত ও অশ্লীল লেখা পড়লে যে কোনো মুসলমানের স্থির থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি বিবেকবান অমুসলিমদেরও গা শিউরে ওঠার কথা। ব্লগে ইসলামী বিধান, রীতি-নীতিকে কটাক্ষ করা হচ্ছে প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় এবং নবী-রাসুলদের কাল্পনিক কাহিনী ও মতামত লেখা হচ্ছে অবলীলায়। ধর্মদ্রোহী ব্লগারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুক্রবার রাতে মিরপুরে খুন হওয়া শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা আহমেদ রাজীব হায়দার ওরফে থাবা বাবা।
অবশ্য রাজীবের ব্লগে ইসলামবিরোধী লেখার লিঙ্কগুলো তার মৃত্যুর পর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন আর ইন্টারনেটে ওইসব ধৃষ্ঠতাপূর্ণ লেখা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে তাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য এসব লিঙ্ক খুঁজে খুঁজে মুছে (ডিলিট) দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, থাবা বাবার লেখা নিয়ে যারা সমালোচনা করেছে ফেসবুকসহ সেই লিঙ্কগুলোও এরই মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গতকাল দৈনিক ইনকিলাব ‘ইসলাম মহানবীকে (স.) অবমাননা করে ব্লগে রাজীবের কুরুচিপূর্ণ লেখা’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট ছাপলে ইনকিলাবের ওয়েবসাইটের ওই লিঙ্কটিও ব্লক করে দেয়া হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তবে কেউ কেউ বলেছেন, তারা অনলাইনে ইনকিলাবের ওই সংবাদটি পড়তে পেরেছেন।
রাজীবকে অজ্ঞাত ঘাতকরা শুক্রবার রাতের অন্ধকারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পর জবাই করে হত্যা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজীব হত্যার মোটিভ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে না পারলেও খোদ প্রধানমন্ত্রী ওই খুনের দায় জামায়াত-শিবিরের ওপর চাপিয়ে তাদের রাজনীতি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ খুন নিয়ে শাহবাগে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাকে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ’ হিসেবে অভিহিত করে প্রতিশোধ নেয়ার শপথ নেয়া হয়েছে। শাহবাগ আন্দোলনকারীরা রাজীব খুনের জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছেন। যদিও জামায়াত আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ‘ব্লগার রাজীব হত্যার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনার তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে থাবা বাবা হিসেবে ব্লগে ইসলামবিদ্বেষী লেখক রাজীবের মৃত্যুর পর ব্লগার কমিউনিটিতে চলছে তোলপাড়। আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
ইন্টারনেট থেকে রাজীবের আপত্তিকর লেখা সরিয়ে নেয়ার আগে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে রাজীব মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম ও প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদকে (স.) নিয়ে অনেক কুরুচিপূর্ণ লেখা ব্লগে লিখে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আওয়ামীপন্থী কিছু ব্লগার এরই মধ্যে ব্লগে অভিযোগ করেছেন, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দারের নিজস্ব ওয়ার্ড প্রেস ব্লগ nuranichapa.wordpress.com ভুয়া। তবে এই ব্লগটা এখন আর নেই কেন এ প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। এই সাইটে ক্লিক করলে লেখা আসছে-nuranichapa.wordpress.com is no longer available
জানা গেছে, এই থাবা বাবা হলো www.dhormockery.net নামক ব্লগের নিয়মিত লেখক। এই সাইটটিও এরই মধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। অবশ্য যে কেউ এর cache copy দেখতে পারেন google.com এ। গুগল এ গিয়ে cache:www.dhormockery.com টাইপ করে enter চাপলেই লেখা আসছে- This is Google’s cache of http://www.dhormockery.com/. It is a snapshot of the page as it appeared on 16 Feb 2013 17:40:37 GMT. The current page could have changed in the meantime. Learn more....
অর্থাত্ গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারিতেই এই সাইটটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যেখানে এখন আর কোনো তথ্য নেই।
দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করে আসা ব্লগাররা ‘থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দারকে ভার্চুয়াল ব্লগে বিচরণ করতে দেখেছেন বলে লিখছেন। গতকাল প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাতেও লেখা হয়েছে, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দার www.amarblog.com এ নিয়মিত লিখতেন। এখানে সে ৩ বছর ১৩ সপ্তাহ ধরে লিখছে যা ব্লগে তার প্রোফাইল অপশন থেকে জানা গেছে। আমার ব্লগের এই লিংক- http://www.amarblog.com/thaba/posts/150478 এ (গতকাল পর্যন্ত শোভা পাচ্ছিল) গেলেও প্রমাণ মিলবে এই ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন।
রাজীব ‘নুরানী চাপা’ নামের একটি ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। সেখানে ‘মোহাম্মকের (মোহাম্মদ+আহাম্মক) সফেদ লুঙ্গি, ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টরি, ঢিলা ও কুলুখ, সিজদা, হেরা গুহা, ইফতারি ও খুর্মা খেজুর, সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত, লাড়াইয়া দে, মদ ও মোহাম্মক, আজল’ ইত্যাদি শিরোনামে বেশ কিছু বিতর্কিত ব্লগ লিখেছে।
ফেসবুকেও ইসলামকে কটাক্ষ করে রাজীবের কিছু মন্তব্য : সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর Ahmed Rajib Haider ফেসবুক এ জয়েন করে। তার ফেসবুক আইডি- https://www.facebook.com/rha.rajib
২০১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে সে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ১০ হাজার মানুষ হত্যার প্রামাণ্য অভিযোগ মাথায় নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাবার্ষিকীতে মুসলমানদের ধর্মীয় উত্সব পালন কতটা মানবিক?’ (সম্ভবত এদিন মুসলমানদের ঈদের দিন ছিল)।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে লিখেছে, ‘সবাই তারেক-কোকো আর হাসিনা-খালেদার বিদেশে টাকা পাচারের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করে ফেলছে... এদিকে প্রতি বছর সবার চোখের সামনে দিয়ে কয়েক লাখ হাজী যে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা সৌদি আরবে ঢেলে দিয়ে আসছে সেটা কেউ টু শব্দটা করে না...!!’
২০১১ সালে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে সে মুসলমানদের নিয়ে কটাক্ষ করে লিখেছে, “মুসলিমদের ‘টেররিস্ট’ আখ্যা দেয়া অন্যায়, তাদের জন্য উপযুক্ত নাম হলো ‘সিরিয়াল কিলার’!”
আবার ২৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, আমরা ঈশ্বর নামক কারও জারজ না... আমাদের বাবা-মায়েরা নিজেদের দৈহিক মিলনের মাধ্যমে আমাদের জন্ম দিয়েছে! আমার স্রষ্টা আমার জেনেটিক বাবা-মা, আমি তাদের সৃষ্টি। আবার আমি আমার সন্তানদের স্রষ্টা...তারা আমার সৃষ্টি!!! আর এই পুরো প্রকৃয়াটিতে বাবা-মায়ের বাইরে যদি কাউকে ধন্যবাদ দিতে হয়, সে হলো ধাত্রী অথবা ডাক্তার ও নার্স!
বিভিন্ন ব্লগে নিহত ব্লগার থাবা বাবার এরকম কয়েকটি লেখা যা হুবহু পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো :

ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টরি : খাদিজার হাতে ধরা খাইয়া মোহাম্মকের টানা একমাস খানা খাইদ্য সাথে দাসী বান্দী পুরাই অফ আছিল (সিয়াম সাধনার ইতিবৃত দ্রষ্টব্য) তার জেলখানার মেয়াদ শেষ হইতে না হইতেই এক দৌড়ে বাইর হইয়া সরাসরি পাবে জমজমে চইলা গেল। এতো দিনের না খাওয়া বান্দা তাই বেসামাল আরবি টানলো হাউশ ফুরাইয়া। তার পর তার সেই চিরাচরিত কাবাঘরের সামনের চত্বরে সাথে তার ইউজুয়াল ইয়ার-দোস্তরা। মোহাম্মক তো টাল স্বপ্নে উম্মেহানীর গুহায় ডুবসাঁতার কাটতে ডাইভ দিছে, আর তার পুরা একমাস ‘মোহাম্মক-মধু’ বঞ্চিত দোস্তরা তাদের কঠিন ইমান লইয়া মধুর ভাণ্ডের ওপর ঝাপায় পড়লো। সবাই আরবি খাওয়া ছিল, তাই টাল সামলাইতে না পাইরা কেউ কেউ মোহাম্মক মনে কইরা অন্যদের মধুও খাওয়া শুরু করলো। যথারীতি সকাল বেলা মোহাম্মক ঊর্ধ্বপোঁদে মধুদ্বার চেগায়া পইড়া থাকলো জ্বালাপোড়া ঠেকাইতে, আর তার পিছে তার ইয়ার দোস্তরা। কারণ টাল হইয়া কে যে কার মধু খাইয়া ফালাইছে তার হিসেব আছিল না, তাই সবারই পশ্চাদ্দেশ ব্যথা। এই দিকে খাদিজা বিবি শিবলি থুক্কু সুবেসাদিকে তার মুবারক নামক ভৃত্যের কাছে খবর পাইলো তার পাতিনবী পতিদেব কাবা ঘরের সামনে আরবি খাইয়া ইয়ারদোস্ত লইয়া পুন্দাপুন্দি করতাছে। কোনোরকমে তুপটা গায়ে জড়ায়া মুবারকরে লইয়া দিল দৌড়। তার যা মেজাজ তখন, হাতের কাছে থান ইট পাইলে মোহাম্মকের মস্তক শরীফ আস্তা থাকার কথা না। খাদিজা দৌড়াইতাছে, সামনে মুবারক দৌড়াইতাছে আর খাদিজা চিল্লায় চিল্লায় কইতাছে ‘মুবারক ইট, মুবারক ইট’, মানে মুবারকরে ইট নিতে কইতাছে মোহাম্মকের মাথা থ্যাতলানের জইন্য। কিন্তু তখনো তো পোড়া ইট আরবে ঢোকে নাই, তাই মুবারকও ইট খুঁইজা পায় নাই। এই দিকে চিল্লাপাল্লা আর খাদিজার ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় দেইখা মানুষজনও তাদের পিছে পিছে যাওয়া শুরু করলো মজমা দেখতে। কিন্তু কাহিনী তো তারা জানে না, তারা শুধু শুনছে খাদিজা চিল্লাচ্ছে ‘ইট মুবারক, ইট মুবারক’!!!
কাবা প্রাঙ্গণে গিয়া দেখে মোহাম্মক আর তার পিছে সবাই লাইন ধইরা ঊর্ধ্বপোঁদে পজিশিত। মক্কাবাসীরে মোহাম্মক আগেই বুঝায় রাখছে যে ঐটা হৈল নামাজের সিজদা (সিজদা দ্রষ্টব) তাই তারা আসল কাহিনী ধরতে না পাইরা মনে করল ইটের দিন জামাতে সিজদা দেওন লাগে আর চিল্লায় চিল্লায় ইট মুবারক কওন লাগে! সেই থেকে একমাস না খায়া থাইকা পরের দিন ঊর্ধ্বপোঁদে নামাজ পরা আর ইট মুবারক বলার রীতি শুরু হইল, আর কালক্রমে শব্দবিচ্যুতির কারণে ইট হয়ে গেল ঈদ!


ঢিলা ও কুলুখ
‘বাবা মোহাম্মক তোমাকে যুদ্ধে যাইতে হইপে।”
‘কেনু কাক্কু?’
‘যুদ্ধে না যাইলে যে আমাগের না খাইয়ে মরিতে হইপে বাবা!’
‘আচ্ছা তবে যাইব। কিন্তুক আমাকে কোথায় খাড়াইয়া যুদ্ধ করিতে হইপে? সামনে খাড়ায় নাকি পিছনে?’
‘মনে করো সামনেই খাড়াইতে হইপে’
আমারে কি উষ্ট্রী দেয়া হইপে নাকি খাড়ার ওপরে পলাইতে হইপে? উষ্ট্রী দিলে কোন কথা নাই, কিন্তু খাড়ার ওপরে পলাইতে হইলে দুইখান কথা আছে।’
‘তোমাকে খাড়ার ওপরই পলাইতে হইপে।’
‘আমি যদি পলাইয়া মক্কা চলিয়া আসিতে পারি, তাহা হইলে কুনু কতা নাই, কিন্তু কাফেররা ধরিয়া ফেলিলে দুইখান কতা আছে।’
‘মনু করো তাহারা তোমাকে ধরিয়া ফেলাইপে’
‘কাফের রমণীরা আমাকে তাহাদের গনিমতের মাল বলিয়া ব্যাবহার করিপে নাকি আমার কল্লা কাটিয়া ফেলাইপে।’
‘কল্লাই কাটিল না হয়, তুমার যা সাইজ ইউজ কেউ করিপে না’!
‘আমাকে কাটিয়া শকুন দিয়া খাওয়াইপে নাকি কব্বর দিপে!’
‘তাকে কব্বরেই পাঠাবে রে বাবা!’
‘আমার কবর কি মরূদ্যানে দেবে নাকি মরুতে? মরুতে দিলে কতা নাই, কিন্তু মরূদ্যানে দিলে দুইখান কতা আছে!’
‘দরকার হইলে মি তুমাকে মরুত্থে তুলে নিয়ে মরূদ্যানে লইয়া আসিপ!’
‘কাক্কু কব্বরে কি খাইজুর গাছ লাগাইপে নাকি বাবলা বেরেক্ষ?’
‘বাবলা বেররেক্ষ হইপে বাবা!’
‘সেই বাবলা গাছে কি জ্বালানি কাষ্ঠ হইপে নাকি কাগজ?’
‘কাগজই হইপে’
‘কি কাগজ কাক্কু? লিখিপার জইন্য বেদাতী কাগজ নাকি টিস্যু’
‘টিস্যুই না হয় হইপে!’
‘সুরত মুছিপার টিস্যু কাক্কু, নাকি এস্তেঞ্জা করিপার?’
প্রশ্নবানে জর্জরিত কাক্কু আপদুল্লা বুঝিয়াছে বাস্তে মোহাআম্মক ভাগার তাল করিতেছে, তাই ক্ষেপেছে বে, ‘এস্তেঞ্জা করিপারই হইপে তোর মতো চুরাকে কি কেউ মাথায় করিয়া রাখিপে?’
‘তাহা হইলে কাক্কু সে টিস্যু কি পুরুষে ব্যবহার করিপে নাকি নারীতে?’
‘তুই কি তছলিমা নাসরীন যে নারী পুরুষে ভেদাভেদ করিয়া দিলি?’
তরুণ মোহাম্মক তাহার প্রশ্নবাণ শেষ করিবার আগেই কাক্কু তাহাকে চাক্কু দেখাইয়া যুদ্ধে পাঠাইয়া দিলো। কেই বা এমন প্যাচাল শুনিতে চায়! মোহাম্মকের সম্যক প্রশ্ন সত্ত্বেও তাহাকে যুদ্ধে যাইতে হইলো জীবনের শেষ পর্যন্ত তাহার যুদ্ধে মরিয়া নারীকূলের ব্যবহার্য টিস্যু হইবার ভয়ে কাটিয়াছে। তাই শেষ পর্যন্ত টিস্যু, মায় জলগ্রহণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করিয়া ঢিলাকুলুখ ও পাত্থর ব্যবহারের রীতি প্রদান করিয়া তবে শান্তি পাইলো! সেই থেকে লিকুইড এস্তেঞ্জার পরে ঢিলাকুলুখ (এক্ষেত্রে নারীকূলের কথা ভাবা হয় নাই) ও সলিড এস্তেঞ্জার পরে ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩ ইত্যাদি সংখ্যক পাত্থর ব্যবহার মুসলমানদিগের জন্য ফরজ হইয়া গেল


সিজদা
মোহাম্মক তাহার ইয়ার দোস্ত লইয়া প্রায়শই কাবা প্রাঙ্গণে আরবি খাইয়া (মদ বিশেষ) পড়িয়া থাকিত। মোহাম্মদ যখন বেহুঁশ হইয়া পড়িয়া রহিত, তখন তাহার ইয়ার দোস্তরা এই গোল্ডেন অপরচুনিটি মিস করিবে কেন? সবার তো আর উম্মেহানী নেই।
ইয়ার-দোস্তদিগের গোল্ডেন অপরচুনিটির শিকার হইয়া সুবে-সাদিকের সময় ঘুম ভাঙ্গিলে রেকটাম-প্রদাহের ঠ্যালায় মোহাম্মকের পক্ষে চিত-কাইত হইয়া শয়ন করা বাস্তবিক অসম্ভব হইয়া দাঁড়াইতো। তাই পশ্চাদ্দেশের আরামের নিমিত্তে সে ঊর্ধ্বপোঁদে রেকটামের স্ফিংকস্টার পেশি চেগাইয়া পড়িয়া থাকিত। এমতাবস্থায় কেউ দেখিয়া ফেলিলে চাপা মারিত যে, সালাত আদায় করিতেছে আর এই ভঙ্গিটির নাম সিজদা।
সেই হইতে মুসলমানের জন্য ঊর্ধ্বপোঁদে সিজদার প্রচলন শুরু হইয়াছে!

৪.
ইফতারি ও খুর্মা খেজুর
একদা মোহাম্মক তাহার ৩০০ মিলিওন বছরের পুরান পাবলিকা মডেলের গাধায় চড়িয়া দাফতরিক কাজে মক্কার উপকণ্ঠে বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের দিকে যাইতেছিল। তাহার মেজাজ যাহারপরনাই খারাপ। যাতায়াতের নিমিত্তে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড মডেলের লিমোজিন উষ্ট্রীটিকে সে পায় নাই। খাদিজা তাহাকে পতিত্ব দান করিয়া শরীরের অধিকার দান করিলেও দাফতরিক কার্যে কেরানি অবধিও পদোন্নতি দান করে নাই। মক্কার সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যবসায়ীর পতি নবী হইলেও তাহাকে অদ্যাবধি সশরীরে মরুভূমিতে দুম্বা চড়াইতে যাইতে হয়। পদোন্নতি ঘটিবে এমন সম্ভাবনাও সুদূর পরাহত। ইকরা পাস করিলে পদোন্নতি ঘটার কথা, জেব্রাইলের উত্তম-মধ্যম খাইয়া ইকরা পাসও করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজার ‘ইমতিহান’এ ফেল মারিয়া থোড় বড়ি খাড়াতেই রহিয়া গিয়াছে, খদিজা বিবি তাহার পদোন্নতি আটকাইয়া দিয়াছে।
আজকের ট্রিপটিতে মোহাম্মক নিজে না গিয়া সাকরেদ আবু বকরীকে পাঠাইতে মনস্থ করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজা তাহার হস্তে ‘কনফিডেনশিয়াল’ কণ্টকখচিত খেজুরপত্রের আঁটি ধরাইয়া সব মাটি করিয়াছে। তাহার হেরা গুহায় গিয়া নাসিকায় উষ্ট্র চর্বির তৈল ঘষিয়া দিবানিদ্রার দ্বাদশ ঘটিকা বাজাইয়া দিয়াছে। তথাপি অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহাকে বাহির হইতে হইলো। বাহির হইবার মুখে একবার মনস্থ করিল খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চন্দ্রাতপ আঁটা উষ্ট্রীখানিকে যাতায়াতের নিমিত্তে লইয়া যাইবে, কিন্তু তাহার কিছু বলিবার আগেই খাদিজা বিবি তাহার হস্তে বসিবার গদিবিহীন পাবলিকা গাধার রজ্জু ধরাইয়া দিল। বনি লুব-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানে যাইতে যাইতে এসব কথা ভাবিয়া খাদিজা বিবির চতুর্দশ গুষ্টির পিণ্ডি উদ্ধার করিতেছিল সে। কনফিডেনশিয়াল না ঘেচু। উষ্ট্রের গায়ে মর্দন করিবার উত্তম তৈলের একচেটিয়া কারবার বনি লুবর-ই-কান গোত্রের। সুদূর মেসোপটেমিয়া হইতে আমদানি করা বিশেষ কাস্তারি ব্র্যান্ডের তৈল না হইলে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড লিমোজিন মডেলের উষ্ট্রীর গাত্র কুটকুট করে। তাই ঐ তৈল না হইলে হয় না। কিন্তু এবারের চালানে মক্কার কেন্দ্রীয় চুঙ্গীঘরকে গোপন করিয়া বেশ কিছু মিশরীয় উষ্ট্রী আসিয়াছে। তাই মক্কার মুসক বিভাগ তাহার পিছে পড়িয়া গিয়াছে উপযুক্ত মুসক আদায়ের লক্ষ্যে। কনফিডেনশিয়াল খেজুর পত্রে বনি লুবর-ই-কান গোত্রাধিপতিকে নির্দেশ প্রদান করা আছে যে, কয় অ্যাম্ফোরা তৈল খাদিজা বিবি ক্রয় করিয়াছে তাহা যেন কুরাইশ মুসক বিভাগের অ্যাম্ফোরা গণকদিগের এনকোয়ারিতে গোপন রাখা হয়, নইলে তাহারা অ্যাম্ফোরা গুনিয়া উষ্ট্রীর মুসক হিসাব করিয়া ফেলিবে।
মোহাম্মক বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের নিকটবর্তী হইতেই দেখিল গোত্রাধিপতির তাম্বুর সম্মুখে মুসক বিভাগের চারিখানা উষ্ট্র দণ্ডায়মান। অ্যাম্ফোরা গণকেরা মোহাম্মকের পূর্বেই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। এই অবস্থায় গাত্র ঢাকা দেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নাই। খাদিজার খেজুর পত্র তাহাদের হাতে পড়িলে সমূহ বিপদ। কাকা আবু তালিব বিন আবদুল মুত্তালিবও তাহাকে উদ্ধার করিয়া আনিতে পারিবে না। মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া আবার মক্কাভিমুখে রওয়ানা হইলো, কিন্তু ততক্ষণে মুসক বিভাগের গণকেরা তাহাকে দেখিয়া ফেলিয়াছে। কিন্তু ততক্ষণে মোহাম্মকও বেশ দূরে চলিয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহার পাবলিকা গণকদিগের রেসিং উষ্ট্রের সহিত পারিবে কেন? তাই মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া নিকটবর্তী পাথরের স্তূপের দিকে ধাবিত হইল। সেই স্থানে পৌঁছাইয়া মোহাম্মক তাড়াতাড়ি তাহার পাবলিকা গাধাটিকে একটি বৃহত্ প্রস্তরের আড়ালে লুকাইয়া নিজে একটি গুহায় গিয়া আত্মগোপন করিল। গণক বাহিনী চলিয়া গেলে সে বাহির হইয়া মক্ষা প্রত্যাবর্তন করিবে। কিয়ত্কাল পরে গণকেরা চলিয়া গেলে মোহাম্মক ধীরে ধীরে গুহা হইতে বাহির হইয়া বোকা গর্ধবটিকে লইয়া মক্কার পথে রওয়ানা হইল। একে তো কার্য সমাধা হয় নাই, তাহার ওপর পাবলিকা গর্ধবের পৃষ্ঠে কোনোরূপ গদি নাই। তাহার পশ্চাদ্দেশে গাধার মেরুদণ্ডের ভার্টিব্রা যেন খেজুর বিচির ন্যায় বিঁধিতে লাগিল। গর্ধবের চেনা পথ, তাহাকে পরিচালিত করিবার প্রয়োজন নাই বিধায় মোহাম্মক গাধার পৃষ্ঠে তন্দ্রাচ্ছন্ন হইয়া পড়িল।
মক্কার মূল পথে উঠিবার ঠিক পূর্বে একটি ক্ষুদ্র মরূদ্যান পার হইবার সময় হঠাত্ করিয়া একটি খেজুর ঝোপের আড়াল হইতে চারিখানা উষ্ট্র আসিয়া তাহার গতি রোধ করিয়া দাঁড়াইল। মোহাম্মক চমকিয়া উঠিল, সেই অ্যাম্ফোরা গণকের দল। তাহারা মোহাম্মককে তাহার তুপ (আরবীয় আলখাল্লা) ধরিয়া নামাইয়া মরূদ্যানের অভ্যন্তরে খেজুর পত্রের তৈরি একখানি নড়বড়ে কুটিরে লইয়া গেল। তাহার পর তাহাকে ভূমিতে ভূলুণ্ঠিত করিয়া খেজুর পত্রের রজ্জু দ্বারা উত্তম রূপে গ্রন্থিত করিয়া জেরা শুরু করিল, খাদিজা বিবি কয়খানা মিশরীয় উষ্ট্রী ইম্পোর্ট করিয়াছে। মোহাম্মকও বলিবে না, অ্যাম্ফোরা গণকেরাও ছাড়িবে না। প্রহর দেড়েক কাটিয়া যাইবার পরেও তাহারাদিগের প্রধান মোহাম্মকের নিকট হইতে কোনো বাক্য উদ্ধার করিতে না পারিয়া শেষে অধস্তন একটি সাকরেদকে নির্দেশ প্রদান করিল যে বাহিরে সবচাইতে বড় যেই ফল পাইবে, তাহাই যেন সত্বর লইয়া আসে। অধস্তন গণনাকারী কিছুক্ষণের মধ্যেই এক কাঁদি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া হাজির হইল। মোহাম্মকের খেজুর দেখিয়াই ক্ষুধা চাগাইয়া উঠিল। যেই সে এই কথা বলিতে যাইবে, অধিপতি বলিল, ‘তুই আবু তালিব বিন মুত্তালিবের ভাতিজা বলিয়া আজ ছাড়িয়া দিতাছি, তথাপি পরবর্তীতে যেন কোনরূপ মুসক দানে অপারগতা প্রকাশ না করিস, তাই কিঞ্চিত্ আগাম সতর্কবার্তা দিয়া ছাড়িয়া দিতাছি।’ তাহার পর চার ষণ্ডা মিলিয়া আল্লার পেয়ারা নবীকে উপুড় করিয়া তুপ তুলিয়া একটা একটা খেজুর ভড়িতে শুরু করিল। মোহাম্মক খেজুর গ্রহণের তীব্র বেদনায় আর্তনাদ করিয়া উঠিল, তাহার পর সে অনুধাবন করিল যে, সে আসলে তাহার পাবলিকার পৃষ্ঠে তন্দ্রার ঘোরে দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছে, আর তাহার পৃষ্ঠের ভার্টিব্রা তাহার পশ্চাদ্দেশে শক্ত খেজুরের ন্যায় খোঁচা মারিয়া যাইতেছে অনবরত।
তন্দ্রা ভাঙিয়া দুঃস্বপ্ন উপলব্ধি করিবার পরপরই সে দেখিল, সে গৃহের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। তড়িঘড়ি করিয়া পাবলিকা হইতে অবতরণ করিয়া অসার পশ্চাদ্দেশে হাত বুলাইতে বুলাইতে ভাবিল, তাহার নসিবখানা নিতান্তই প্রসন্ন যে, সে আরব ভূমিতে জন্মিয়াছে। নচেত্ বাঙ্গালদেশের কাঁঠাল, দাক্ষিণাত্যের নারকেল বা নিদেনপক্ষে পারস্যের আখরোট গ্রহণ করতঃ তাহার রেকটামের দ্বাদশ ঘটিকা বাজিয়া যাইত। তাই সে আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণের নিমিত্তে আল্লাকে শুক্রাণু থুড়ি শুক্রিয়া আদায় করিয়া মুচকি মুচকি হাসিয়া ফেলিল। ঠিক এই সময় আবু-বকরী একঝুড়ি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া খাদিজা বিবির গৃহদ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইল, উপরন্তু মোহাম্মককে আল্লার কাছে শুক্রিয়া আদায় অবস্থায় আবিষ্কার করিল। মোহাম্মকের শুক্রিয়া আদায় সমাপ্ত হইলে সে জিজ্ঞাসা করিল, ‘হে রাসুলে খোদা, এই শুক্রিয়া আদায়ের নিমিত্ত সম্পর্কে কি আমি জ্ঞাত হইতে পারি?’ রাসুলে খোদা তাহার দিকে ফিরিয়া হস্তের ঝুড়িটির দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া মৃদু হাস্যে বলিল, ‘ইয়া আবু বকরী, তুমি নিশ্চয়ই আল্লার শুক্রিয়া আদায় করো, কারণ তুমি জান না আল্লা তোমাদিগের জন্য রমজানের ইফতারিতে কি তিনখানা বস্তু নেয়ামত স্বরূপ পাঠাইয়াছে।’
বকরি সুধাইলো, ‘কি সেই তিনখানা বস্তু খোদাবন্দ?’
মোহাম্মক রিপ্লাই করিল, ‘তাহার প্রথমটি হইলো খেজুর কাঁঠাল নয়, বল আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা’
‘দ্বিতীয়টি হইলো খেজুর নারিকেল নয়, বলো আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
তৃতীয়টি হলো খেজুর আখরোট নয়, বলো, ‘আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
এই বলিয়া মোহাম্মক আবু বকরীর নিকট হইতে খেজুরপূর্ণ ঝুড়িখানা হস্তগত করিয়া গৃহাভ্যন্তরে অন্তর্নিহিত হইলো আর বকরী আল্লা ও তার রাসুলের গুণে মুগ্ধ হইয়া এই আশ্চর্য সুসংবাদ তামাম জাহানের মুসলমানদিগের নিকট পৌঁছাইয়া দিতে বাহির হইয়া পড়িল!
৬.
সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত
সে অনেক কাল আগের কথা। আরবের লোকেরা তখন আল্লাকে ভুলিয়া গিয়াছিল। ভোলে নাই কেবল একজন, মহামতি মোহাম্মক। তাহাও খোদাতালা তাহাকে জেব্রাইল প্রেরণ করিয়া উত্তম মধ্যম সহযোগে ইয়াদ করাইয়া না দিলে তাহারও আল্লার কথা ইয়াদ করিতে বেগ পাইতে হইতো। তা সেইবার জেব্রাইলের মধ্যম উত্তমরূপে খাইয়া তাহার ভয়ানকরূপে বাহিরে বালিয়াড়ির আড়ালে যাইবার বেগ চাপিয়াছিল কিনা আমাদিগের নিশ্চিত জানা নাই, তবে তাহার বৃদ্ধা পত্নী খাদিজা হইতে বর্ণিত যে, সেবার পর্বত-পাদদেশ হইতে ভেড়া লইয়া ফিরিবার পর সবরী থুক্কু পেয়ারা নবী বেশ কিছু দিবস শয্যাশায়ী ছিলেন। যাহা হউক, তাহার বেশ কিছুদিন গত হইবার পর আজিকার এই কাহিনীর আরম্ভ।
হেরা গুহায় জেব্রাইলের উত্তম মধ্যম খাইয়া মোহাম্মদের আল্লার কথা মনে পড়িয়াছিল বটে। আধুনিক বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের মাথায় ডান্ডার বাড়ি খাইয়া ইয়াদ্দাশ ফেরত আসিবার গল্প বোধ করি ১৪০০ বত্সর পূর্বের মোহাম্মকের উত্তম মধ্যম খাইবার ঘটনা হইতেই আসিয়াছে। তবে স্মৃতি ফিরাইবার ক্ষেত্রে উত্তম মধ্যম যে কীরূপ কার্যকর তাহা মোহাম্মকের ঘটনা হইতেই উত্তমরূপে প্রতীয়মান হয়। সেই স্মৃতি এমনই বলশালী হইয়া ফেরত আসিয়াছিল যে মোহাম্মক তাহার বাকি জীবন আল্লার শবরী কলা হিসাবেই কাটাইয়া দিবার নিমিত্তে নিজেকে উত্সর্গ করিয়া দিয়াছিল। তবে তাহার আল্লার দূত হইবার সমস্ত আয়োজনই এক কথায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়া যাইতে বসিয়াছিল তাহার পত্নী খাদিজার উপস্থিতিতে। খাদিজা তাহার পতি-নবীকে হস্তে রাখিবার নিমিত্তে তাহার সমস্ত কথাই বিনা বাক্যব্যয়ে মানিয়া লইয়াছিল ঠিকই, তথাপি তাহার কথায় কদাচিত্ বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে। আর মোহাম্মক যেইরূপ প্রায়শই তাহার ব্যবসায়িক তহবিল তছরুপ করিত, তাহাতে তাহার আল্লার সাক্ষ্যও খুব একটা কার্যকরী হইতে পারিছেলিন না। অপর হস্তে খাদিজা প্রেমময় পত্নী হইলেও বিষয়বুদ্ধিতে ছিলেন খুব কড়া। পতিনবী মোহাম্মককে পরমাত্মীয় বলিয়া ক্ষমা করিবার পাত্রী খদিজা ছিলেন না। তাই প্রতিবারই সে তহবিল হোক চাই কি ভেড়ার পাল, তছরুপের দায়ে মোহাম্মককে শাস্তি পাইতে হইতো। তা সে পিঠে হালকা পাদুকা বৃষ্টি নতুবা পানাহার রহিতকরণ।
সেইরূপ একদা মোহাম্মক পত্নী খাদিজার অনুমতি ব্যতিরেকে আস্ত একপাল উট আল্লার পথে উত্সর্গ করিয়া বসিয়াছিল, যদিও তাহার কোন চাক্ষুস প্রমাণ উপস্থিত করিতে ব্যর্থ হওয়ায় খাদিজা তাহাকে শাস্তিস্বরূপ এক চদ্রকাল দিবাভাগের পানাহার রহিত করিয়া তাহাকে শাস্তি প্রদান করিয়াছিল। সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত তাহার নিকট পানাহার প্রেরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, দাসীদিগের ওপরেও মোহাম্মকের নিকট না যাইতে কড়া হুকুম জারি করিয়া দিয়াছিলেন। তাই খাবার ও দাসী উভয় হইতেই মোহাম্মক বঞ্চিত হইতেছিল। দিবাভাগ ব্যতীত পানাহার ও দাসীর সমব্যভিহারে কোন নিষেধাজ্ঞা খাদিজার নির্দেশনামায় না থাকিলেও খাদিজা মহাম্মকের কর্মকাণ্ডের প্রতি কঠিন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছিলেন। তাহাতে মোহাম্মক বেজায় বেকায়দায় পড়িয়াছিল।। খাদ্যে তাহার সেন্সরশিপের সহিত খাদিজাকে গোপন করিয়া কচিত্-কদাচিত্ দাসী নতুবা বগ্নি উম্ম-হানীর সাহচর্য লাভের সুযোগও রহিত হইয়া বসিল।
এমতাবস্থায় শিশ্নের ক্ষুধা চাপিয়া রাখিতে পারিলেও আরবস্থলির ক্ষুধা নিবারণ ক্রমশ কঠিন হইয়া যাইতেছিল। সূর্যাস্তের পরে ও নিদ্রাপূর্বক আহার ব্যতীত অন্যরূপ আহারের অভাবে মোহাম্মক উদরে প্রস্থরবন্ধনী লইতে বাধ্য হইয়াছিল। তথাপী তাহার ক্ষুধা নিবারণে অন্যরূপ সমস্ত উপায়ও খাদিজা রহিত করিয়া রাখিয়াছিলেন। এমতাবস্থায় রাত্রি দ্বিপ্রহরে লোকচক্ষুর অন্তরালে চুপি চুপি খাদিজার হেঁসেল হইতে চৌর্যবৃত্তি ব্যতীত আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
কিন্তু কথায় যেরূপ বলিয়া থাকে যে মোহাম্মকের বিংশ রজনী ও খাদিজার এক, সেরূপ শাস্তির বিংশত রজনী দ্বিপ্রহরে মোহাম্মক খাদিজার হস্তে রঞ্জিত হস্তে ধরা পড়িয়া গেল। তাহাতে লোক জানাজানিও কম হইলো না। ঘৃহের অভ্যন্তরে কোনরূপ মান-সম্ভ্রম কোনকালেই মোহাম্মকের ছিল না, কিন্তু মক্কা নগরীর জনগণের নিকট আল্লার একমাত্র সেবকরূপে তাহার বিশেষ পরিচিতি বজায় ছিল। তাহার ওপর মোহাম্মকের গোপন কারোবার হিসেবে একখানা অর্থের বিনিময়ে আমানত-গাহ বিশেষ খ্যাতিপ্রাপ্ত হইয়াছিল ও তাহার গুডউইল হিসাবে তাহার কপালে আলামিন খেতাবও জুটিয়া গিয়াছিল। এমতাবস্থায় চৌর্যবৃত্তির সহিত তাহার সংস্রব প্রমাণিত হইলে তাহার যত্সামান্য এক্সট্রা ইনকামও রহিত হইয়া কদাচিত্ খাদিজার আরালে ইয়ার দোস্ত লইয়া আমোদ স্ফুর্তি করিবার পথও রহিত হইয়া যাইবে। তাই তাহার আমানতগাহ এবং আলামিন উপাধি রক্ষার্থে তাহাকে সর্বসমক্ষে একখানা চাপা উপস্থিত করিতে হইলো, তাহা হইলো ঐ একচন্দ্র সময়কাল যাহাকে স্থানীয় ভাষায় রমজানুল চন্দ্র বলা হইতো আল্লাহ তাহাকে সিয়াম সাধনা করিতে নির্দেশ দিয়াছেন। আর এই সিয়াম সাধনার তরিকা হইলো রাত্রি দ্বিপ্রহরে আহার্য সাধন করিতে হইবে, তাহার পর সূর্যাস্তের পরে আবার আহার্য গ্রহণের অনুমতি মিলিবে। এই সময়ের মধ্যে কোনরূপ পানাহার ও নারীগমন নিষিদ্ধ। সেই হইতে মোহাম্মকের চৌর্যবৃত্তি ঢাকিতে প্রদত্ত চাপা অনুসরণে মোহাম্মকের বিশাল উম্মক-বাহিনী অদ্যবধি রমজানুল চন্দ্রে সেইরূপ পানাহার ও নারীগমনে বিরত থাকে এবং সূর্যাস্তের পরে ও রাত্রি দ্বিপ্রহরে খাদ্যগ্রহণে প্রবৃত্ত হয়। এই বিধানকেই আমরা পবিত্র সিয়াম সাধনা বলিয়া মানিয়া থাকি।
অন্যদিকে চৌর্যবৃত্তির শাস্তিস্বরূপ তাহার খাদ্য রহিতকরণের বিংশ দিবসের পর হতে অবশিষ্ট চন্দ্রদিবস সমূহতে খাদিজা মোহাম্মককে কক্ষে অন্তরীণ করিয়া রাখিয়াছিলেন, যা হোক অদ্যাবধি আমরা ইতিকাফ বলিয়া পালন করিয়া থাকি।
ব্লগার রাজীব ওরফে থাবা বাবার আরও অনেক পোস্ট রয়েছে যেগুলো খুবই অশ্লীল বলে ছাপা গেল না।


রাজীবের পাশাপাশি আরও যেসব ব্লগার শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে, তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ইসলামবিদ্বেষী লেখালেখি চালিয়ে আসছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ডা. ইমরান এইচ সরকার, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, নিজেকে নাস্তিক দাবিকারী আসিফ মহিউদ্দিন, কট্টর আওয়ামীপন্থী ব্লগার ইব্রাহিম খলিল (সবাক) প্রমুখ। এছাড়া ইংল্যান্ড প্রবাসী আওয়ামীপন্থী এক ব্লগার আরিফুর রহমানকে দেখা যায় নানা আপত্তিকর মন্তব্য করতে। তাদের মধ্যে আসিফ মহিউদ্দিন সামনের সারিতে থেকে শাহবাগের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে নিজেকে নাস্তিক দাবি করলেও তার যত মাথাব্যথা ইসলাম ধর্ম নিয়ে। তবে কখনও কখনও সমন্বয়ের অংশ হিসেবে অন্য একটি ধর্মেরও সমালোচনা করে থাকে সে। একটি বিশেষ ধর্মের সে অনুসারী হলেও মুসলিম নাম ধারণ করে ইসলামকে বিতর্কিত করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে গুজব রয়েছে।
নিচে শাহবাগ আন্দোলনে সক্রিয় কয়েকজন আওয়ামীপন্থী ও নাস্তিক ব্লগারের কটাক্ষপূর্ণ এরকম কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো :


কোরআনের আয়াত ও ইসলাম নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিনের কটাক্ষ : আসিফ মহিউদ্দিন একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। সে কমিউনিজমে বিশ্বাসী। শাহবাগে প্রথম সমাবেশে সে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ওইদিন তাকে পিঠ চাপড়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এ ধরনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য।
আসিফ মহিউদ্দিন (গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০০) ব্লগে একটি পোস্ট লেখে। সেখানে ইসলাম ও কোরআনকে কটাক্ষ করে তার লেখা হলো :
‘বিসমিল্লহির রহমানির রাহিম। আউজুবিল্লা হিমিনাশ শাইতানির নাস্তিকানির নাজিম।’
গত বছরের ৫ মে পবিত্র কোরআন শরিফকে মহাপবিত্র ‘আহাম্মকোপিডিয়া’ লেখার মতোও ধৃষ্টতা দেখায় এ ব্লগার। তবে পরে তীব্র প্রতিবাদের মুখে এ পোস্টটি সে তার ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলে (এর স্ক্রিন শট এখনও আছে)।
আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেসবুক ওয়ালে মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (স.) নিয়ে লেখে, ‘মুহাম্মদ নিজেকে আইডল বা নিজেকেই ঈশ্বর না বলে একটি কল্পিত ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেছেন। মানুষ যেন ব্যক্তিপূজায় আসক্ত না হয়, তাকেই যেন মানুষ ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করতে শুরু না করে, সে ব্যাপারে তিনি কঠোর ছিলেন। তাই তার সমস্ত রচনাই তিনি আল্লার নামে চালিয়ে দিয়েছেন, এর রচয়িতা হিসেবে আল্লাকে সৃষ্টি করেছেন!’ আরেক লেখায় সে লিখেছে, ‘ধর্মান্ধ মুসলিমদের উত্তেজনার শেষ নেই। তাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে মুহাম্মদের ছবি আঁকলো, কে ধর্মের সমালোচনা করলো। অথচ এতে মুহাম্মদ/আল্লার কখনই কিছু যাবে আসবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মুহাম্মদের ছবি আঁকা হলে স্বর্গে মুহাম্মদ সাহেব কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে আত্মহত্যা করছেন! আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, তার উম্মতরা ঠিকই তাকে একজন পীরে পরিণত করেছে।’ ফেসবুকে বিশ্বনবীর একটি কাল্পনিক ছবিকে দেখিয়ে সে লেখে, এই ছবিটা মুহাম্মদের উন্মাদ উম্মতদের উদ্দেশ্যে একটা জবাব হতে পারে।’
ইসলামের বিধান পর্দা বা বোরকা নিয়ে সে লিখেছে, ‘বোরখা পরাটা সমর্থন করি না, বোরখা হিজাব মূলত আরবির বর্বর সমাজের প্রতীক। একটা সমাজে অত্যধিক বোরখার প্রাদুর্ভাব থাকা মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষগুলো সব এক একটা ধর্ষক, সেই ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকল নারীকে একটা জেলখানা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এইসব অজুহাতে নারীকে যুগ যুগ ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, কখনও ঘরের ভেতরে, আবার কখনও বোরখা নামক চলমান জেলখানার ভেতরে।’
ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য দান নিয়েও কটাক্ষ করে সে লিখেছে, ‘ধার্মিকদের মাথায় স্বার্থচিন্তা থাকে যে, এই উপকারে সে পরকালে হুর পাবে। এমনকি তারা কোন দরিদ্র, দুস্থ, পঙ্গু মানুষকে দেখলেও বেশিরভাগ সময়ই স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাবে। আর যদি ওই পঙ্গু লোকটির কথা ভাবেও, তাতেও তাদের মাথায় থাকে স্বর্গে হুরী সঙ্গমের অশ্লীল চিন্তা।’ তার মতে, ‘জনগণের সুখ ও অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে, তা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উচ্ছেদ।’
তবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে এমন অবমাননামূলক ও উসকানিমূলক পোস্ট দিলেও আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।


আরিফুর রহমান (হুঙ্কারসহ নানা নামে লেখে) লেখে, ‘আমি মনে করি আল্লা বিষয়টা মুহাম্মদের একটা বুজরুকি। ছিটগ্রস্ত মুহাম্মদ তার হ্যালুসিনেশনের সময় মনে করতো জিব্রাইল আইছে, তাই আল্লার কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে ধর্ম তৈরি করেছে। নাম দিয়েছে ইজলাম। এই হলো আল্লা বিষয়ে আসল কাহিনী।’ হিজাব নিয়ে আরিফ লিখেছে, ‘হিজাব হলো ছৌদি নোংরামির চূড়ান্ত... কুত্তাদের কালো কাপড়ের কালচার। একে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়াটাই একটা বড় রকমের গুনাহ...!! হিজাবের বিরুদ্ধে পোস্টতো আসবই। ইসলামী পুরুষতন্ত্রের ছাগুরা।’


ইব্রাহিম খলিল (সবাক) : ইব্রাহিম খলিল নামের এক প্রতারক সবাক নামে লিখেছে, ‘মির্জা সাথীর প্রোফাইট পিকচার সুন্দর। নিজের অজান্তেই লুল ফালাইতে ইচ্ছা কর্তাছে...’
আলআওয়াম আল আনায়াম (আওয়ামী লীগ চতুষ্পদ জানোয়ারের ন্যায়)। সুরা গো.আ, আয়াত-৪২০।
ধর্ম নিয়ে সবাক লিখেছে, ‘শুয়রের বাচ্চারা বানাইছে একখান বালের ধর্ম। বৌ... (এতটা অশ্লীল শব্দ যে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না) কিছু কথা কইছে, আর... ফালানোর পর কিছু কথা বলে। দুইটাই শালাগো ধর্তব্য হইছে। বিশ্বাস হালকা কইরা স্বার্থবন্দী কথাগুলান যাচাই কইরা আবার ধার্মিকরাই বাহির কইরলো বিরাট ক্যারফা। তারপর ধর্মের গোয়া বাইর হইছে লস্করই-তাইয়্যিবাল, বাল কায়েদা, বালকাতুল জিহাদ, সোগাবুত হাহরীর। ধর্মরেও... ধর্মের সোগা দিয়া পয়দা হওয়া বর্বরগুলানরেও... ।’
শুধু তাই নয়, শাহবাগের আন্দোলনকারীদের অনেকের ফেসবুকে ইসলামকে নিয়ে নানা কটূক্তিকর স্ট্যাটাস বেশ দেখা যাচ্ছে। ঠিক এমনি আশরাফুল ইসলাম রাতুল নামে এক আন্দোলনকারী কিছুদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘সাহস থাকলে একবার শাহাবাগ আয় রাজাকারের চুদারা, তোদের মুহাম্মদ (স.) আর নিজামী বাপকে একে অন্যের পোদের ভেতর ঢুকাবো।’ (নাউজুবিল্লাহ্)
এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে রীতিমত তোলপাড় চলছে। উসকানিমূলক ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব মন্তব্যের প্রতিবাদ ও ইসলাম ধর্মের নানা দিক নিয়ে যথাসাধ্য পোস্ট দিচ্ছেন ইসলামপন্থী ব্লগাররা। তারা নাস্তিকদের দেয়া নানা যুক্তিও খণ্ডনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ব্লগারদের এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের সতর্ক থাকার আহ্বানও জানানো হয়।
সুত্রঃ আমারদেশ,১৮/০২/২০১৩

মহানবী হজরত মোহাম্মদ স. সম্পর্কে ধর্মদ্রোহী ও নাস্তিক কুত্তা রাজিবের জঘন্য  বিষোদ্গার
     আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন দয়া করে এই লেখাটা পড়ুন ও শেয়ার করুন

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে মত প্রকাশের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে ওঠা ব্লগকে একশ্রেণীর যুবক ইসলামের বিরুদ্ধে কুত্সা রটনার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ধর্মদ্রোহী ও নাস্তিক যুবগোষ্ঠী মহান আল্লাহ, পবিত্র গ্রন্থ কোরআন, মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.), ঈদ, নামায, রোজা ও হজ সম্পর্কে জঘন্য ভাষায় বিষোদ্গার করে মুসলমানদের ইমান-আকীদায় আঘাত হানছে। তাদের কুিসত ও অশ্লীল লেখা পড়লে যে কোনো মুসলমানের স্থির থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি বিবেকবান অমুসলিমদেরও গা শিউরে ওঠার কথা। ব্লগে ইসলামী বিধান, রীতি-নীতিকে কটাক্ষ করা হচ্ছে প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় এবং নবী-রাসুলদের কাল্পনিক কাহিনী ও মতামত লেখা হচ্ছে অবলীলায়। ধর্মদ্রোহী ব্লগারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুক্রবার রাতে মিরপুরে খুন হওয়া শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা আহমেদ রাজীব হায়দার ওরফে থাবা বাবা।
অবশ্য রাজীবের ব্লগে ইসলামবিরোধী লেখার লিঙ্কগুলো তার মৃত্যুর পর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন আর ইন্টারনেটে ওইসব ধৃষ্ঠতাপূর্ণ লেখা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে তাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য এসব লিঙ্ক খুঁজে খুঁজে মুছে (ডিলিট) দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, থাবা বাবার লেখা নিয়ে যারা সমালোচনা করেছে ফেসবুকসহ সেই লিঙ্কগুলোও এরই মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গতকাল দৈনিক ইনকিলাব ‘ইসলাম মহানবীকে (স.) অবমাননা করে ব্লগে রাজীবের কুরুচিপূর্ণ লেখা’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট ছাপলে ইনকিলাবের ওয়েবসাইটের ওই লিঙ্কটিও ব্লক করে দেয়া হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তবে কেউ কেউ বলেছেন, তারা অনলাইনে ইনকিলাবের ওই সংবাদটি পড়তে পেরেছেন।
রাজীবকে অজ্ঞাত ঘাতকরা শুক্রবার রাতের অন্ধকারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পর জবাই করে হত্যা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজীব হত্যার মোটিভ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে না পারলেও খোদ প্রধানমন্ত্রী ওই খুনের দায় জামায়াত-শিবিরের ওপর চাপিয়ে তাদের রাজনীতি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ খুন নিয়ে শাহবাগে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাকে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ’ হিসেবে অভিহিত করে প্রতিশোধ নেয়ার শপথ নেয়া হয়েছে। শাহবাগ আন্দোলনকারীরা রাজীব খুনের জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছেন। যদিও জামায়াত আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ‘ব্লগার রাজীব হত্যার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনার তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে থাবা বাবা হিসেবে ব্লগে ইসলামবিদ্বেষী লেখক রাজীবের মৃত্যুর পর ব্লগার কমিউনিটিতে চলছে তোলপাড়। আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
ইন্টারনেট থেকে রাজীবের আপত্তিকর লেখা সরিয়ে নেয়ার আগে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে রাজীব মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম ও প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদকে (স.) নিয়ে অনেক কুরুচিপূর্ণ লেখা ব্লগে লিখে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আওয়ামীপন্থী কিছু ব্লগার এরই মধ্যে ব্লগে অভিযোগ করেছেন, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দারের নিজস্ব ওয়ার্ড প্রেস ব্লগ nuranichapa.wordpress.com ভুয়া। তবে এই ব্লগটা এখন আর নেই কেন এ প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। এই সাইটে ক্লিক করলে লেখা আসছে-nuranichapa.wordpress.com is no longer available
জানা গেছে, এই থাবা বাবা হলো www.dhormockery.net নামক ব্লগের নিয়মিত লেখক। এই সাইটটিও এরই মধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। অবশ্য যে কেউ এর cache copy দেখতে পারেন google.com এ। গুগল এ গিয়ে cache:www.dhormockery.com টাইপ করে enter চাপলেই লেখা আসছে- This is Google’s cache of http://www.dhormockery.com/. It is a snapshot of the page as it appeared on 16 Feb 2013 17:40:37 GMT. The current page could have changed in the meantime. Learn more....
অর্থাত্ গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারিতেই এই সাইটটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যেখানে এখন আর কোনো তথ্য নেই।
দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করে আসা ব্লগাররা ‘থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দারকে ভার্চুয়াল ব্লগে বিচরণ করতে দেখেছেন বলে লিখছেন। গতকাল প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাতেও লেখা হয়েছে, ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দার www.amarblog.com এ নিয়মিত লিখতেন। এখানে সে ৩ বছর ১৩ সপ্তাহ ধরে লিখছে যা ব্লগে তার প্রোফাইল অপশন থেকে জানা গেছে। আমার ব্লগের এই লিংক- http://www.amarblog.com/thaba/posts/150478 এ (গতকাল পর্যন্ত শোভা পাচ্ছিল) গেলেও প্রমাণ মিলবে এই ব্লগার থাবা বাবা ওরফে আহমেদ রাজীব হায়দার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন।
রাজীব ‘নুরানী চাপা’ নামের একটি ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। সেখানে ‘মোহাম্মকের (মোহাম্মদ+আহাম্মক) সফেদ লুঙ্গি, ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টরি, ঢিলা ও কুলুখ, সিজদা, হেরা গুহা, ইফতারি ও খুর্মা খেজুর, সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত, লাড়াইয়া দে, মদ ও মোহাম্মক, আজল’ ইত্যাদি শিরোনামে বেশ কিছু বিতর্কিত ব্লগ লিখেছে।
ফেসবুকেও ইসলামকে কটাক্ষ করে রাজীবের কিছু মন্তব্য : সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর Ahmed Rajib Haider ফেসবুক এ জয়েন করে। তার ফেসবুক আইডি- https://www.facebook.com/rha.rajib
২০১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে সে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ১০ হাজার মানুষ হত্যার প্রামাণ্য অভিযোগ মাথায় নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাবার্ষিকীতে মুসলমানদের ধর্মীয় উত্সব পালন কতটা মানবিক?’ (সম্ভবত এদিন মুসলমানদের ঈদের দিন ছিল)।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে লিখেছে, ‘সবাই তারেক-কোকো আর হাসিনা-খালেদার বিদেশে টাকা পাচারের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করে ফেলছে... এদিকে প্রতি বছর সবার চোখের সামনে দিয়ে কয়েক লাখ হাজী যে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা সৌদি আরবে ঢেলে দিয়ে আসছে সেটা কেউ টু শব্দটা করে না...!!’
২০১১ সালে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে সে মুসলমানদের নিয়ে কটাক্ষ করে লিখেছে, “মুসলিমদের ‘টেররিস্ট’ আখ্যা দেয়া অন্যায়, তাদের জন্য উপযুক্ত নাম হলো ‘সিরিয়াল কিলার’!”
আবার ২৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, আমরা ঈশ্বর নামক কারও জারজ না... আমাদের বাবা-মায়েরা নিজেদের দৈহিক মিলনের মাধ্যমে আমাদের জন্ম দিয়েছে! আমার স্রষ্টা আমার জেনেটিক বাবা-মা, আমি তাদের সৃষ্টি। আবার আমি আমার সন্তানদের স্রষ্টা...তারা আমার সৃষ্টি!!! আর এই পুরো প্রকৃয়াটিতে বাবা-মায়ের বাইরে যদি কাউকে ধন্যবাদ দিতে হয়, সে হলো ধাত্রী অথবা ডাক্তার ও নার্স!
বিভিন্ন ব্লগে নিহত ব্লগার থাবা বাবার এরকম কয়েকটি লেখা যা হুবহু পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো :

ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টরি : খাদিজার হাতে ধরা খাইয়া মোহাম্মকের টানা একমাস খানা খাইদ্য সাথে দাসী বান্দী পুরাই অফ আছিল (সিয়াম সাধনার ইতিবৃত দ্রষ্টব্য) তার জেলখানার মেয়াদ শেষ হইতে না হইতেই এক দৌড়ে বাইর হইয়া সরাসরি পাবে জমজমে চইলা গেল। এতো দিনের না খাওয়া বান্দা তাই বেসামাল আরবি টানলো হাউশ ফুরাইয়া। তার পর তার সেই চিরাচরিত কাবাঘরের সামনের চত্বরে সাথে তার ইউজুয়াল ইয়ার-দোস্তরা। মোহাম্মক তো টাল স্বপ্নে উম্মেহানীর গুহায় ডুবসাঁতার কাটতে ডাইভ দিছে, আর তার পুরা একমাস ‘মোহাম্মক-মধু’ বঞ্চিত দোস্তরা তাদের কঠিন ইমান লইয়া মধুর ভাণ্ডের ওপর ঝাপায় পড়লো। সবাই আরবি খাওয়া ছিল, তাই টাল সামলাইতে না পাইরা কেউ কেউ মোহাম্মক মনে কইরা অন্যদের মধুও খাওয়া শুরু করলো। যথারীতি সকাল বেলা মোহাম্মক ঊর্ধ্বপোঁদে মধুদ্বার চেগায়া পইড়া থাকলো জ্বালাপোড়া ঠেকাইতে, আর তার পিছে তার ইয়ার দোস্তরা। কারণ টাল হইয়া কে যে কার মধু খাইয়া ফালাইছে তার হিসেব আছিল না, তাই সবারই পশ্চাদ্দেশ ব্যথা। এই দিকে খাদিজা বিবি শিবলি থুক্কু সুবেসাদিকে তার মুবারক নামক ভৃত্যের কাছে খবর পাইলো তার পাতিনবী পতিদেব কাবা ঘরের সামনে আরবি খাইয়া ইয়ারদোস্ত লইয়া পুন্দাপুন্দি করতাছে। কোনোরকমে তুপটা গায়ে জড়ায়া মুবারকরে লইয়া দিল দৌড়। তার যা মেজাজ তখন, হাতের কাছে থান ইট পাইলে মোহাম্মকের মস্তক শরীফ আস্তা থাকার কথা না। খাদিজা দৌড়াইতাছে, সামনে মুবারক দৌড়াইতাছে আর খাদিজা চিল্লায় চিল্লায় কইতাছে ‘মুবারক ইট, মুবারক ইট’, মানে মুবারকরে ইট নিতে কইতাছে মোহাম্মকের মাথা থ্যাতলানের জইন্য। কিন্তু তখনো তো পোড়া ইট আরবে ঢোকে নাই, তাই মুবারকও ইট খুঁইজা পায় নাই। এই দিকে চিল্লাপাল্লা আর খাদিজার ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় দেইখা মানুষজনও তাদের পিছে পিছে যাওয়া শুরু করলো মজমা দেখতে। কিন্তু কাহিনী তো তারা জানে না, তারা শুধু শুনছে খাদিজা চিল্লাচ্ছে ‘ইট মুবারক, ইট মুবারক’!!!
কাবা প্রাঙ্গণে গিয়া দেখে মোহাম্মক আর তার পিছে সবাই লাইন ধইরা ঊর্ধ্বপোঁদে পজিশিত। মক্কাবাসীরে মোহাম্মক আগেই বুঝায় রাখছে যে ঐটা হৈল নামাজের সিজদা (সিজদা দ্রষ্টব) তাই তারা আসল কাহিনী ধরতে না পাইরা মনে করল ইটের দিন জামাতে সিজদা দেওন লাগে আর চিল্লায় চিল্লায় ইট মুবারক কওন লাগে! সেই থেকে একমাস না খায়া থাইকা পরের দিন ঊর্ধ্বপোঁদে নামাজ পরা আর ইট মুবারক বলার রীতি শুরু হইল, আর কালক্রমে শব্দবিচ্যুতির কারণে ইট হয়ে গেল ঈদ!


ঢিলা ও কুলুখ
‘বাবা মোহাম্মক তোমাকে যুদ্ধে যাইতে হইপে।”
‘কেনু কাক্কু?’
‘যুদ্ধে না যাইলে যে আমাগের না খাইয়ে মরিতে হইপে বাবা!’
‘আচ্ছা তবে যাইব। কিন্তুক আমাকে কোথায় খাড়াইয়া যুদ্ধ করিতে হইপে? সামনে খাড়ায় নাকি পিছনে?’
‘মনে করো সামনেই খাড়াইতে হইপে’
আমারে কি উষ্ট্রী দেয়া হইপে নাকি খাড়ার ওপরে পলাইতে হইপে? উষ্ট্রী দিলে কোন কথা নাই, কিন্তু খাড়ার ওপরে পলাইতে হইলে দুইখান কথা আছে।’
‘তোমাকে খাড়ার ওপরই পলাইতে হইপে।’
‘আমি যদি পলাইয়া মক্কা চলিয়া আসিতে পারি, তাহা হইলে কুনু কতা নাই, কিন্তু কাফেররা ধরিয়া ফেলিলে দুইখান কতা আছে।’
‘মনু করো তাহারা তোমাকে ধরিয়া ফেলাইপে’
‘কাফের রমণীরা আমাকে তাহাদের গনিমতের মাল বলিয়া ব্যাবহার করিপে নাকি আমার কল্লা কাটিয়া ফেলাইপে।’
‘কল্লাই কাটিল না হয়, তুমার যা সাইজ ইউজ কেউ করিপে না’!
‘আমাকে কাটিয়া শকুন দিয়া খাওয়াইপে নাকি কব্বর দিপে!’
‘তাকে কব্বরেই পাঠাবে রে বাবা!’
‘আমার কবর কি মরূদ্যানে দেবে নাকি মরুতে? মরুতে দিলে কতা নাই, কিন্তু মরূদ্যানে দিলে দুইখান কতা আছে!’
‘দরকার হইলে মি তুমাকে মরুত্থে তুলে নিয়ে মরূদ্যানে লইয়া আসিপ!’
‘কাক্কু কব্বরে কি খাইজুর গাছ লাগাইপে নাকি বাবলা বেরেক্ষ?’
‘বাবলা বেররেক্ষ হইপে বাবা!’
‘সেই বাবলা গাছে কি জ্বালানি কাষ্ঠ হইপে নাকি কাগজ?’
‘কাগজই হইপে’
‘কি কাগজ কাক্কু? লিখিপার জইন্য বেদাতী কাগজ নাকি টিস্যু’
‘টিস্যুই না হয় হইপে!’
‘সুরত মুছিপার টিস্যু কাক্কু, নাকি এস্তেঞ্জা করিপার?’
প্রশ্নবানে জর্জরিত কাক্কু আপদুল্লা বুঝিয়াছে বাস্তে মোহাআম্মক ভাগার তাল করিতেছে, তাই ক্ষেপেছে বে, ‘এস্তেঞ্জা করিপারই হইপে তোর মতো চুরাকে কি কেউ মাথায় করিয়া রাখিপে?’
‘তাহা হইলে কাক্কু সে টিস্যু কি পুরুষে ব্যবহার করিপে নাকি নারীতে?’
‘তুই কি তছলিমা নাসরীন যে নারী পুরুষে ভেদাভেদ করিয়া দিলি?’
তরুণ মোহাম্মক তাহার প্রশ্নবাণ শেষ করিবার আগেই কাক্কু তাহাকে চাক্কু দেখাইয়া যুদ্ধে পাঠাইয়া দিলো। কেই বা এমন প্যাচাল শুনিতে চায়! মোহাম্মকের সম্যক প্রশ্ন সত্ত্বেও তাহাকে যুদ্ধে যাইতে হইলো জীবনের শেষ পর্যন্ত তাহার যুদ্ধে মরিয়া নারীকূলের ব্যবহার্য টিস্যু হইবার ভয়ে কাটিয়াছে। তাই শেষ পর্যন্ত টিস্যু, মায় জলগ্রহণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করিয়া ঢিলাকুলুখ ও পাত্থর ব্যবহারের রীতি প্রদান করিয়া তবে শান্তি পাইলো! সেই থেকে লিকুইড এস্তেঞ্জার পরে ঢিলাকুলুখ (এক্ষেত্রে নারীকূলের কথা ভাবা হয় নাই) ও সলিড এস্তেঞ্জার পরে ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩ ইত্যাদি সংখ্যক পাত্থর ব্যবহার মুসলমানদিগের জন্য ফরজ হইয়া গেল


সিজদা
মোহাম্মক তাহার ইয়ার দোস্ত লইয়া প্রায়শই কাবা প্রাঙ্গণে আরবি খাইয়া (মদ বিশেষ) পড়িয়া থাকিত। মোহাম্মদ যখন বেহুঁশ হইয়া পড়িয়া রহিত, তখন তাহার ইয়ার দোস্তরা এই গোল্ডেন অপরচুনিটি মিস করিবে কেন? সবার তো আর উম্মেহানী নেই।
ইয়ার-দোস্তদিগের গোল্ডেন অপরচুনিটির শিকার হইয়া সুবে-সাদিকের সময় ঘুম ভাঙ্গিলে রেকটাম-প্রদাহের ঠ্যালায় মোহাম্মকের পক্ষে চিত-কাইত হইয়া শয়ন করা বাস্তবিক অসম্ভব হইয়া দাঁড়াইতো। তাই পশ্চাদ্দেশের আরামের নিমিত্তে সে ঊর্ধ্বপোঁদে রেকটামের স্ফিংকস্টার পেশি চেগাইয়া পড়িয়া থাকিত। এমতাবস্থায় কেউ দেখিয়া ফেলিলে চাপা মারিত যে, সালাত আদায় করিতেছে আর এই ভঙ্গিটির নাম সিজদা।
সেই হইতে মুসলমানের জন্য ঊর্ধ্বপোঁদে সিজদার প্রচলন শুরু হইয়াছে!

৪.
ইফতারি ও খুর্মা খেজুর
একদা মোহাম্মক তাহার ৩০০ মিলিওন বছরের পুরান পাবলিকা মডেলের গাধায় চড়িয়া দাফতরিক কাজে মক্কার উপকণ্ঠে বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের দিকে যাইতেছিল। তাহার মেজাজ যাহারপরনাই খারাপ। যাতায়াতের নিমিত্তে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড মডেলের লিমোজিন উষ্ট্রীটিকে সে পায় নাই। খাদিজা তাহাকে পতিত্ব দান করিয়া শরীরের অধিকার দান করিলেও দাফতরিক কার্যে কেরানি অবধিও পদোন্নতি দান করে নাই। মক্কার সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যবসায়ীর পতি নবী হইলেও তাহাকে অদ্যাবধি সশরীরে মরুভূমিতে দুম্বা চড়াইতে যাইতে হয়। পদোন্নতি ঘটিবে এমন সম্ভাবনাও সুদূর পরাহত। ইকরা পাস করিলে পদোন্নতি ঘটার কথা, জেব্রাইলের উত্তম-মধ্যম খাইয়া ইকরা পাসও করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজার ‘ইমতিহান’এ ফেল মারিয়া থোড় বড়ি খাড়াতেই রহিয়া গিয়াছে, খদিজা বিবি তাহার পদোন্নতি আটকাইয়া দিয়াছে।
আজকের ট্রিপটিতে মোহাম্মক নিজে না গিয়া সাকরেদ আবু বকরীকে পাঠাইতে মনস্থ করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজা তাহার হস্তে ‘কনফিডেনশিয়াল’ কণ্টকখচিত খেজুরপত্রের আঁটি ধরাইয়া সব মাটি করিয়াছে। তাহার হেরা গুহায় গিয়া নাসিকায় উষ্ট্র চর্বির তৈল ঘষিয়া দিবানিদ্রার দ্বাদশ ঘটিকা বাজাইয়া দিয়াছে। তথাপি অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহাকে বাহির হইতে হইলো। বাহির হইবার মুখে একবার মনস্থ করিল খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চন্দ্রাতপ আঁটা উষ্ট্রীখানিকে যাতায়াতের নিমিত্তে লইয়া যাইবে, কিন্তু তাহার কিছু বলিবার আগেই খাদিজা বিবি তাহার হস্তে বসিবার গদিবিহীন পাবলিকা গাধার রজ্জু ধরাইয়া দিল। বনি লুব-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানে যাইতে যাইতে এসব কথা ভাবিয়া খাদিজা বিবির চতুর্দশ গুষ্টির পিণ্ডি উদ্ধার করিতেছিল সে। কনফিডেনশিয়াল না ঘেচু। উষ্ট্রের গায়ে মর্দন করিবার উত্তম তৈলের একচেটিয়া কারবার বনি লুবর-ই-কান গোত্রের। সুদূর মেসোপটেমিয়া হইতে আমদানি করা বিশেষ কাস্তারি ব্র্যান্ডের তৈল না হইলে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড লিমোজিন মডেলের উষ্ট্রীর গাত্র কুটকুট করে। তাই ঐ তৈল না হইলে হয় না। কিন্তু এবারের চালানে মক্কার কেন্দ্রীয় চুঙ্গীঘরকে গোপন করিয়া বেশ কিছু মিশরীয় উষ্ট্রী আসিয়াছে। তাই মক্কার মুসক বিভাগ তাহার পিছে পড়িয়া গিয়াছে উপযুক্ত মুসক আদায়ের লক্ষ্যে। কনফিডেনশিয়াল খেজুর পত্রে বনি লুবর-ই-কান গোত্রাধিপতিকে নির্দেশ প্রদান করা আছে যে, কয় অ্যাম্ফোরা তৈল খাদিজা বিবি ক্রয় করিয়াছে তাহা যেন কুরাইশ মুসক বিভাগের অ্যাম্ফোরা গণকদিগের এনকোয়ারিতে গোপন রাখা হয়, নইলে তাহারা অ্যাম্ফোরা গুনিয়া উষ্ট্রীর মুসক হিসাব করিয়া ফেলিবে।
মোহাম্মক বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের নিকটবর্তী হইতেই দেখিল গোত্রাধিপতির তাম্বুর সম্মুখে মুসক বিভাগের চারিখানা উষ্ট্র দণ্ডায়মান। অ্যাম্ফোরা গণকেরা মোহাম্মকের পূর্বেই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। এই অবস্থায় গাত্র ঢাকা দেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নাই। খাদিজার খেজুর পত্র তাহাদের হাতে পড়িলে সমূহ বিপদ। কাকা আবু তালিব বিন আবদুল মুত্তালিবও তাহাকে উদ্ধার করিয়া আনিতে পারিবে না। মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া আবার মক্কাভিমুখে রওয়ানা হইলো, কিন্তু ততক্ষণে মুসক বিভাগের গণকেরা তাহাকে দেখিয়া ফেলিয়াছে। কিন্তু ততক্ষণে মোহাম্মকও বেশ দূরে চলিয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহার পাবলিকা গণকদিগের রেসিং উষ্ট্রের সহিত পারিবে কেন? তাই মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া নিকটবর্তী পাথরের স্তূপের দিকে ধাবিত হইল। সেই স্থানে পৌঁছাইয়া মোহাম্মক তাড়াতাড়ি তাহার পাবলিকা গাধাটিকে একটি বৃহত্ প্রস্তরের আড়ালে লুকাইয়া নিজে একটি গুহায় গিয়া আত্মগোপন করিল। গণক বাহিনী চলিয়া গেলে সে বাহির হইয়া মক্ষা প্রত্যাবর্তন করিবে। কিয়ত্কাল পরে গণকেরা চলিয়া গেলে মোহাম্মক ধীরে ধীরে গুহা হইতে বাহির হইয়া বোকা গর্ধবটিকে লইয়া মক্কার পথে রওয়ানা হইল। একে তো কার্য সমাধা হয় নাই, তাহার ওপর পাবলিকা গর্ধবের পৃষ্ঠে কোনোরূপ গদি নাই। তাহার পশ্চাদ্দেশে গাধার মেরুদণ্ডের ভার্টিব্রা যেন খেজুর বিচির ন্যায় বিঁধিতে লাগিল। গর্ধবের চেনা পথ, তাহাকে পরিচালিত করিবার প্রয়োজন নাই বিধায় মোহাম্মক গাধার পৃষ্ঠে তন্দ্রাচ্ছন্ন হইয়া পড়িল।
মক্কার মূল পথে উঠিবার ঠিক পূর্বে একটি ক্ষুদ্র মরূদ্যান পার হইবার সময় হঠাত্ করিয়া একটি খেজুর ঝোপের আড়াল হইতে চারিখানা উষ্ট্র আসিয়া তাহার গতি রোধ করিয়া দাঁড়াইল। মোহাম্মক চমকিয়া উঠিল, সেই অ্যাম্ফোরা গণকের দল। তাহারা মোহাম্মককে তাহার তুপ (আরবীয় আলখাল্লা) ধরিয়া নামাইয়া মরূদ্যানের অভ্যন্তরে খেজুর পত্রের তৈরি একখানি নড়বড়ে কুটিরে লইয়া গেল। তাহার পর তাহাকে ভূমিতে ভূলুণ্ঠিত করিয়া খেজুর পত্রের রজ্জু দ্বারা উত্তম রূপে গ্রন্থিত করিয়া জেরা শুরু করিল, খাদিজা বিবি কয়খানা মিশরীয় উষ্ট্রী ইম্পোর্ট করিয়াছে। মোহাম্মকও বলিবে না, অ্যাম্ফোরা গণকেরাও ছাড়িবে না। প্রহর দেড়েক কাটিয়া যাইবার পরেও তাহারাদিগের প্রধান মোহাম্মকের নিকট হইতে কোনো বাক্য উদ্ধার করিতে না পারিয়া শেষে অধস্তন একটি সাকরেদকে নির্দেশ প্রদান করিল যে বাহিরে সবচাইতে বড় যেই ফল পাইবে, তাহাই যেন সত্বর লইয়া আসে। অধস্তন গণনাকারী কিছুক্ষণের মধ্যেই এক কাঁদি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া হাজির হইল। মোহাম্মকের খেজুর দেখিয়াই ক্ষুধা চাগাইয়া উঠিল। যেই সে এই কথা বলিতে যাইবে, অধিপতি বলিল, ‘তুই আবু তালিব বিন মুত্তালিবের ভাতিজা বলিয়া আজ ছাড়িয়া দিতাছি, তথাপি পরবর্তীতে যেন কোনরূপ মুসক দানে অপারগতা প্রকাশ না করিস, তাই কিঞ্চিত্ আগাম সতর্কবার্তা দিয়া ছাড়িয়া দিতাছি।’ তাহার পর চার ষণ্ডা মিলিয়া আল্লার পেয়ারা নবীকে উপুড় করিয়া তুপ তুলিয়া একটা একটা খেজুর ভড়িতে শুরু করিল। মোহাম্মক খেজুর গ্রহণের তীব্র বেদনায় আর্তনাদ করিয়া উঠিল, তাহার পর সে অনুধাবন করিল যে, সে আসলে তাহার পাবলিকার পৃষ্ঠে তন্দ্রার ঘোরে দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছে, আর তাহার পৃষ্ঠের ভার্টিব্রা তাহার পশ্চাদ্দেশে শক্ত খেজুরের ন্যায় খোঁচা মারিয়া যাইতেছে অনবরত।
তন্দ্রা ভাঙিয়া দুঃস্বপ্ন উপলব্ধি করিবার পরপরই সে দেখিল, সে গৃহের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। তড়িঘড়ি করিয়া পাবলিকা হইতে অবতরণ করিয়া অসার পশ্চাদ্দেশে হাত বুলাইতে বুলাইতে ভাবিল, তাহার নসিবখানা নিতান্তই প্রসন্ন যে, সে আরব ভূমিতে জন্মিয়াছে। নচেত্ বাঙ্গালদেশের কাঁঠাল, দাক্ষিণাত্যের নারকেল বা নিদেনপক্ষে পারস্যের আখরোট গ্রহণ করতঃ তাহার রেকটামের দ্বাদশ ঘটিকা বাজিয়া যাইত। তাই সে আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণের নিমিত্তে আল্লাকে শুক্রাণু থুড়ি শুক্রিয়া আদায় করিয়া মুচকি মুচকি হাসিয়া ফেলিল। ঠিক এই সময় আবু-বকরী একঝুড়ি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া খাদিজা বিবির গৃহদ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইল, উপরন্তু মোহাম্মককে আল্লার কাছে শুক্রিয়া আদায় অবস্থায় আবিষ্কার করিল। মোহাম্মকের শুক্রিয়া আদায় সমাপ্ত হইলে সে জিজ্ঞাসা করিল, ‘হে রাসুলে খোদা, এই শুক্রিয়া আদায়ের নিমিত্ত সম্পর্কে কি আমি জ্ঞাত হইতে পারি?’ রাসুলে খোদা তাহার দিকে ফিরিয়া হস্তের ঝুড়িটির দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া মৃদু হাস্যে বলিল, ‘ইয়া আবু বকরী, তুমি নিশ্চয়ই আল্লার শুক্রিয়া আদায় করো, কারণ তুমি জান না আল্লা তোমাদিগের জন্য রমজানের ইফতারিতে কি তিনখানা বস্তু নেয়ামত স্বরূপ পাঠাইয়াছে।’
বকরি সুধাইলো, ‘কি সেই তিনখানা বস্তু খোদাবন্দ?’
মোহাম্মক রিপ্লাই করিল, ‘তাহার প্রথমটি হইলো খেজুর কাঁঠাল নয়, বল আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা’
‘দ্বিতীয়টি হইলো খেজুর নারিকেল নয়, বলো আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
তৃতীয়টি হলো খেজুর আখরোট নয়, বলো, ‘আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
এই বলিয়া মোহাম্মক আবু বকরীর নিকট হইতে খেজুরপূর্ণ ঝুড়িখানা হস্তগত করিয়া গৃহাভ্যন্তরে অন্তর্নিহিত হইলো আর বকরী আল্লা ও তার রাসুলের গুণে মুগ্ধ হইয়া এই আশ্চর্য সুসংবাদ তামাম জাহানের মুসলমানদিগের নিকট পৌঁছাইয়া দিতে বাহির হইয়া পড়িল!
৬.
সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত
সে অনেক কাল আগের কথা। আরবের লোকেরা তখন আল্লাকে ভুলিয়া গিয়াছিল। ভোলে নাই কেবল একজন, মহামতি মোহাম্মক। তাহাও খোদাতালা তাহাকে জেব্রাইল প্রেরণ করিয়া উত্তম মধ্যম সহযোগে ইয়াদ করাইয়া না দিলে তাহারও আল্লার কথা ইয়াদ করিতে বেগ পাইতে হইতো। তা সেইবার জেব্রাইলের মধ্যম উত্তমরূপে খাইয়া তাহার ভয়ানকরূপে বাহিরে বালিয়াড়ির আড়ালে যাইবার বেগ চাপিয়াছিল কিনা আমাদিগের নিশ্চিত জানা নাই, তবে তাহার বৃদ্ধা পত্নী খাদিজা হইতে বর্ণিত যে, সেবার পর্বত-পাদদেশ হইতে ভেড়া লইয়া ফিরিবার পর সবরী থুক্কু পেয়ারা নবী বেশ কিছু দিবস শয্যাশায়ী ছিলেন। যাহা হউক, তাহার বেশ কিছুদিন গত হইবার পর আজিকার এই কাহিনীর আরম্ভ।
হেরা গুহায় জেব্রাইলের উত্তম মধ্যম খাইয়া মোহাম্মদের আল্লার কথা মনে পড়িয়াছিল বটে। আধুনিক বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের মাথায় ডান্ডার বাড়ি খাইয়া ইয়াদ্দাশ ফেরত আসিবার গল্প বোধ করি ১৪০০ বত্সর পূর্বের মোহাম্মকের উত্তম মধ্যম খাইবার ঘটনা হইতেই আসিয়াছে। তবে স্মৃতি ফিরাইবার ক্ষেত্রে উত্তম মধ্যম যে কীরূপ কার্যকর তাহা মোহাম্মকের ঘটনা হইতেই উত্তমরূপে প্রতীয়মান হয়। সেই স্মৃতি এমনই বলশালী হইয়া ফেরত আসিয়াছিল যে মোহাম্মক তাহার বাকি জীবন আল্লার শবরী কলা হিসাবেই কাটাইয়া দিবার নিমিত্তে নিজেকে উত্সর্গ করিয়া দিয়াছিল। তবে তাহার আল্লার দূত হইবার সমস্ত আয়োজনই এক কথায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়া যাইতে বসিয়াছিল তাহার পত্নী খাদিজার উপস্থিতিতে। খাদিজা তাহার পতি-নবীকে হস্তে রাখিবার নিমিত্তে তাহার সমস্ত কথাই বিনা বাক্যব্যয়ে মানিয়া লইয়াছিল ঠিকই, তথাপি তাহার কথায় কদাচিত্ বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে। আর মোহাম্মক যেইরূপ প্রায়শই তাহার ব্যবসায়িক তহবিল তছরুপ করিত, তাহাতে তাহার আল্লার সাক্ষ্যও খুব একটা কার্যকরী হইতে পারিছেলিন না। অপর হস্তে খাদিজা প্রেমময় পত্নী হইলেও বিষয়বুদ্ধিতে ছিলেন খুব কড়া। পতিনবী মোহাম্মককে পরমাত্মীয় বলিয়া ক্ষমা করিবার পাত্রী খদিজা ছিলেন না। তাই প্রতিবারই সে তহবিল হোক চাই কি ভেড়ার পাল, তছরুপের দায়ে মোহাম্মককে শাস্তি পাইতে হইতো। তা সে পিঠে হালকা পাদুকা বৃষ্টি নতুবা পানাহার রহিতকরণ।
সেইরূপ একদা মোহাম্মক পত্নী খাদিজার অনুমতি ব্যতিরেকে আস্ত একপাল উট আল্লার পথে উত্সর্গ করিয়া বসিয়াছিল, যদিও তাহার কোন চাক্ষুস প্রমাণ উপস্থিত করিতে ব্যর্থ হওয়ায় খাদিজা তাহাকে শাস্তিস্বরূপ এক চদ্রকাল দিবাভাগের পানাহার রহিত করিয়া তাহাকে শাস্তি প্রদান করিয়াছিল। সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত তাহার নিকট পানাহার প্রেরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, দাসীদিগের ওপরেও মোহাম্মকের নিকট না যাইতে কড়া হুকুম জারি করিয়া দিয়াছিলেন। তাই খাবার ও দাসী উভয় হইতেই মোহাম্মক বঞ্চিত হইতেছিল। দিবাভাগ ব্যতীত পানাহার ও দাসীর সমব্যভিহারে কোন নিষেধাজ্ঞা খাদিজার নির্দেশনামায় না থাকিলেও খাদিজা মহাম্মকের কর্মকাণ্ডের প্রতি কঠিন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছিলেন। তাহাতে মোহাম্মক বেজায় বেকায়দায় পড়িয়াছিল।। খাদ্যে তাহার সেন্সরশিপের সহিত খাদিজাকে গোপন করিয়া কচিত্-কদাচিত্ দাসী নতুবা বগ্নি উম্ম-হানীর সাহচর্য লাভের সুযোগও রহিত হইয়া বসিল।
এমতাবস্থায় শিশ্নের ক্ষুধা চাপিয়া রাখিতে পারিলেও আরবস্থলির ক্ষুধা নিবারণ ক্রমশ কঠিন হইয়া যাইতেছিল। সূর্যাস্তের পরে ও নিদ্রাপূর্বক আহার ব্যতীত অন্যরূপ আহারের অভাবে মোহাম্মক উদরে প্রস্থরবন্ধনী লইতে বাধ্য হইয়াছিল। তথাপী তাহার ক্ষুধা নিবারণে অন্যরূপ সমস্ত উপায়ও খাদিজা রহিত করিয়া রাখিয়াছিলেন। এমতাবস্থায় রাত্রি দ্বিপ্রহরে লোকচক্ষুর অন্তরালে চুপি চুপি খাদিজার হেঁসেল হইতে চৌর্যবৃত্তি ব্যতীত আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
কিন্তু কথায় যেরূপ বলিয়া থাকে যে মোহাম্মকের বিংশ রজনী ও খাদিজার এক, সেরূপ শাস্তির বিংশত রজনী দ্বিপ্রহরে মোহাম্মক খাদিজার হস্তে রঞ্জিত হস্তে ধরা পড়িয়া গেল। তাহাতে লোক জানাজানিও কম হইলো না। ঘৃহের অভ্যন্তরে কোনরূপ মান-সম্ভ্রম কোনকালেই মোহাম্মকের ছিল না, কিন্তু মক্কা নগরীর জনগণের নিকট আল্লার একমাত্র সেবকরূপে তাহার বিশেষ পরিচিতি বজায় ছিল। তাহার ওপর মোহাম্মকের গোপন কারোবার হিসেবে একখানা অর্থের বিনিময়ে আমানত-গাহ বিশেষ খ্যাতিপ্রাপ্ত হইয়াছিল ও তাহার গুডউইল হিসাবে তাহার কপালে আলামিন খেতাবও জুটিয়া গিয়াছিল। এমতাবস্থায় চৌর্যবৃত্তির সহিত তাহার সংস্রব প্রমাণিত হইলে তাহার যত্সামান্য এক্সট্রা ইনকামও রহিত হইয়া কদাচিত্ খাদিজার আরালে ইয়ার দোস্ত লইয়া আমোদ স্ফুর্তি করিবার পথও রহিত হইয়া যাইবে। তাই তাহার আমানতগাহ এবং আলামিন উপাধি রক্ষার্থে তাহাকে সর্বসমক্ষে একখানা চাপা উপস্থিত করিতে হইলো, তাহা হইলো ঐ একচন্দ্র সময়কাল যাহাকে স্থানীয় ভাষায় রমজানুল চন্দ্র বলা হইতো আল্লাহ তাহাকে সিয়াম সাধনা করিতে নির্দেশ দিয়াছেন। আর এই সিয়াম সাধনার তরিকা হইলো রাত্রি দ্বিপ্রহরে আহার্য সাধন করিতে হইবে, তাহার পর সূর্যাস্তের পরে আবার আহার্য গ্রহণের অনুমতি মিলিবে। এই সময়ের মধ্যে কোনরূপ পানাহার ও নারীগমন নিষিদ্ধ। সেই হইতে মোহাম্মকের চৌর্যবৃত্তি ঢাকিতে প্রদত্ত চাপা অনুসরণে মোহাম্মকের বিশাল উম্মক-বাহিনী অদ্যবধি রমজানুল চন্দ্রে সেইরূপ পানাহার ও নারীগমনে বিরত থাকে এবং সূর্যাস্তের পরে ও রাত্রি দ্বিপ্রহরে খাদ্যগ্রহণে প্রবৃত্ত হয়। এই বিধানকেই আমরা পবিত্র সিয়াম সাধনা বলিয়া মানিয়া থাকি।
অন্যদিকে চৌর্যবৃত্তির শাস্তিস্বরূপ তাহার খাদ্য রহিতকরণের বিংশ দিবসের পর হতে অবশিষ্ট চন্দ্রদিবস সমূহতে খাদিজা মোহাম্মককে কক্ষে অন্তরীণ করিয়া রাখিয়াছিলেন, যা হোক অদ্যাবধি আমরা ইতিকাফ বলিয়া পালন করিয়া থাকি।
ব্লগার রাজীব ওরফে থাবা বাবার আরও অনেক পোস্ট রয়েছে যেগুলো খুবই অশ্লীল বলে ছাপা গেল না।


রাজীবের পাশাপাশি আরও যেসব ব্লগার শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে, তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ইসলামবিদ্বেষী লেখালেখি চালিয়ে আসছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ডা. ইমরান এইচ সরকার, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, নিজেকে নাস্তিক দাবিকারী আসিফ মহিউদ্দিন, কট্টর আওয়ামীপন্থী ব্লগার ইব্রাহিম খলিল (সবাক) প্রমুখ। এছাড়া ইংল্যান্ড প্রবাসী আওয়ামীপন্থী এক ব্লগার আরিফুর রহমানকে দেখা যায় নানা আপত্তিকর মন্তব্য করতে। তাদের মধ্যে আসিফ মহিউদ্দিন সামনের সারিতে থেকে শাহবাগের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে নিজেকে নাস্তিক দাবি করলেও তার যত মাথাব্যথা ইসলাম ধর্ম নিয়ে। তবে কখনও কখনও সমন্বয়ের অংশ হিসেবে অন্য একটি ধর্মেরও সমালোচনা করে থাকে সে। একটি বিশেষ ধর্মের সে অনুসারী হলেও মুসলিম নাম ধারণ করে ইসলামকে বিতর্কিত করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে গুজব রয়েছে।
নিচে শাহবাগ আন্দোলনে সক্রিয় কয়েকজন আওয়ামীপন্থী ও নাস্তিক ব্লগারের কটাক্ষপূর্ণ এরকম কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো :


কোরআনের আয়াত ও ইসলাম নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিনের কটাক্ষ : আসিফ মহিউদ্দিন একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। সে কমিউনিজমে বিশ্বাসী। শাহবাগে প্রথম সমাবেশে সে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ওইদিন তাকে পিঠ চাপড়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এ ধরনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য।
আসিফ মহিউদ্দিন (গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০০) ব্লগে একটি পোস্ট লেখে। সেখানে ইসলাম ও কোরআনকে কটাক্ষ করে তার লেখা হলো :
‘বিসমিল্লহির রহমানির রাহিম। আউজুবিল্লা হিমিনাশ শাইতানির নাস্তিকানির নাজিম।’
গত বছরের ৫ মে পবিত্র কোরআন শরিফকে মহাপবিত্র ‘আহাম্মকোপিডিয়া’ লেখার মতোও ধৃষ্টতা দেখায় এ ব্লগার। তবে পরে তীব্র প্রতিবাদের মুখে এ পোস্টটি সে তার ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলে (এর স্ক্রিন শট এখনও আছে)।
আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেসবুক ওয়ালে মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (স.) নিয়ে লেখে, ‘মুহাম্মদ নিজেকে আইডল বা নিজেকেই ঈশ্বর না বলে একটি কল্পিত ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেছেন। মানুষ যেন ব্যক্তিপূজায় আসক্ত না হয়, তাকেই যেন মানুষ ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করতে শুরু না করে, সে ব্যাপারে তিনি কঠোর ছিলেন। তাই তার সমস্ত রচনাই তিনি আল্লার নামে চালিয়ে দিয়েছেন, এর রচয়িতা হিসেবে আল্লাকে সৃষ্টি করেছেন!’ আরেক লেখায় সে লিখেছে, ‘ধর্মান্ধ মুসলিমদের উত্তেজনার শেষ নেই। তাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে মুহাম্মদের ছবি আঁকলো, কে ধর্মের সমালোচনা করলো। অথচ এতে মুহাম্মদ/আল্লার কখনই কিছু যাবে আসবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মুহাম্মদের ছবি আঁকা হলে স্বর্গে মুহাম্মদ সাহেব কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে আত্মহত্যা করছেন! আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, তার উম্মতরা ঠিকই তাকে একজন পীরে পরিণত করেছে।’ ফেসবুকে বিশ্বনবীর একটি কাল্পনিক ছবিকে দেখিয়ে সে লেখে, এই ছবিটা মুহাম্মদের উন্মাদ উম্মতদের উদ্দেশ্যে একটা জবাব হতে পারে।’
ইসলামের বিধান পর্দা বা বোরকা নিয়ে সে লিখেছে, ‘বোরখা পরাটা সমর্থন করি না, বোরখা হিজাব মূলত আরবির বর্বর সমাজের প্রতীক। একটা সমাজে অত্যধিক বোরখার প্রাদুর্ভাব থাকা মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষগুলো সব এক একটা ধর্ষক, সেই ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকল নারীকে একটা জেলখানা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এইসব অজুহাতে নারীকে যুগ যুগ ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, কখনও ঘরের ভেতরে, আবার কখনও বোরখা নামক চলমান জেলখানার ভেতরে।’
ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য দান নিয়েও কটাক্ষ করে সে লিখেছে, ‘ধার্মিকদের মাথায় স্বার্থচিন্তা থাকে যে, এই উপকারে সে পরকালে হুর পাবে। এমনকি তারা কোন দরিদ্র, দুস্থ, পঙ্গু মানুষকে দেখলেও বেশিরভাগ সময়ই স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাবে। আর যদি ওই পঙ্গু লোকটির কথা ভাবেও, তাতেও তাদের মাথায় থাকে স্বর্গে হুরী সঙ্গমের অশ্লীল চিন্তা।’ তার মতে, ‘জনগণের সুখ ও অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে, তা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উচ্ছেদ।’
তবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে এমন অবমাননামূলক ও উসকানিমূলক পোস্ট দিলেও আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।


আরিফুর রহমান (হুঙ্কারসহ নানা নামে লেখে) লেখে, ‘আমি মনে করি আল্লা বিষয়টা মুহাম্মদের একটা বুজরুকি। ছিটগ্রস্ত মুহাম্মদ তার হ্যালুসিনেশনের সময় মনে করতো জিব্রাইল আইছে, তাই আল্লার কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে ধর্ম তৈরি করেছে। নাম দিয়েছে ইজলাম। এই হলো আল্লা বিষয়ে আসল কাহিনী।’ হিজাব নিয়ে আরিফ লিখেছে, ‘হিজাব হলো ছৌদি নোংরামির চূড়ান্ত... কুত্তাদের কালো কাপড়ের কালচার। একে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়াটাই একটা বড় রকমের গুনাহ...!! হিজাবের বিরুদ্ধে পোস্টতো আসবই। ইসলামী পুরুষতন্ত্রের ছাগুরা।’


ইব্রাহিম খলিল (সবাক) : ইব্রাহিম খলিল নামের এক প্রতারক সবাক নামে লিখেছে, ‘মির্জা সাথীর প্রোফাইট পিকচার সুন্দর। নিজের অজান্তেই লুল ফালাইতে ইচ্ছা কর্তাছে...’
আলআওয়াম আল আনায়াম (আওয়ামী লীগ চতুষ্পদ জানোয়ারের ন্যায়)। সুরা গো.আ, আয়াত-৪২০।
ধর্ম নিয়ে সবাক লিখেছে, ‘শুয়রের বাচ্চারা বানাইছে একখান বালের ধর্ম। বৌ... (এতটা অশ্লীল শব্দ যে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না) কিছু কথা কইছে, আর... ফালানোর পর কিছু কথা বলে। দুইটাই শালাগো ধর্তব্য হইছে। বিশ্বাস হালকা কইরা স্বার্থবন্দী কথাগুলান যাচাই কইরা আবার ধার্মিকরাই বাহির কইরলো বিরাট ক্যারফা। তারপর ধর্মের গোয়া বাইর হইছে লস্করই-তাইয়্যিবাল, বাল কায়েদা, বালকাতুল জিহাদ, সোগাবুত হাহরীর। ধর্মরেও... ধর্মের সোগা দিয়া পয়দা হওয়া বর্বরগুলানরেও... ।’
শুধু তাই নয়, শাহবাগের আন্দোলনকারীদের অনেকের ফেসবুকে ইসলামকে নিয়ে নানা কটূক্তিকর স্ট্যাটাস বেশ দেখা যাচ্ছে। ঠিক এমনি আশরাফুল ইসলাম রাতুল নামে এক আন্দোলনকারী কিছুদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘সাহস থাকলে একবার শাহাবাগ আয় রাজাকারের চুদারা, তোদের মুহাম্মদ (স.) আর নিজামী বাপকে একে অন্যের পোদের ভেতর ঢুকাবো।’ (নাউজুবিল্লাহ্)
এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে রীতিমত তোলপাড় চলছে। উসকানিমূলক ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব মন্তব্যের প্রতিবাদ ও ইসলাম ধর্মের নানা দিক নিয়ে যথাসাধ্য পোস্ট দিচ্ছেন ইসলামপন্থী ব্লগাররা। তারা নাস্তিকদের দেয়া নানা যুক্তিও খণ্ডনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ব্লগারদের এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের সতর্ক থাকার আহ্বানও জানানো হয়।
সুত্রঃ আমারদেশ,১৮/০২/২০১৩
কেন অজু ছাড়া জানাজা?
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম
চিরদিন কারও সমান নাহি যায়। ঊনসত্তুরে এমনই উত্তাল জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানে। সে ছাত্র গণজাগরণে নেতৃত্ব ছিল, কর্তৃত্ব ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। তখন অগণতান্ত্রিক পাকিস্তান ছিল। কিন্তু তবু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ ছিল। সারা দেশের ছাত্র-যুবকের নেতৃত্ব করত সেসব ছাত্র সংসদ। ’৬৯-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলার আলীগড় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ, মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজ, নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ, বাংলার দ্বিতীয় আলীগড় সাদত্ মহাবিদ্যালয়ে—এদের নেতৃত্ব ছিল, কর্তৃত্ব ছিল। একঝাঁক তরুণ তখন আলোর দিশারি হয়ে দেশকে পথ দেখিয়েছে। যুবকের মধ্যে সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, আ. রাজ্জাক, কে.এম. ওবায়দুর রহমান, আবদুর রউব, খালেদ মহম্মদ আলী, ফেরদৌস কোরাইশী, মোজাহেরুল হক বাকী, তোফায়েল আহমেদ, আ.স.ম আবদুর রব, আ. কুদ্দুস মাখন, নুরে আলম সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আল মোজাহিদী—কাকে রেখে কার কথা বলব? লতিফ সিদ্দিকী যখন বক্তৃতা করতেন সেই সভায় হ্যালো হ্যালো করে গর্ববোধ করতেন বর্তমান স্পিকার বা মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। এর পরের স্তর আমাদের কথা বাদই দিলাম। সেই ছাত্র গণজাগরণ বিজয়ের মুখ দেখেছিল। বাংলাদেশ সৃষ্টির সেইসব জীবিত মহানায়করা আজ সবাই অবহেলিত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত। একজনও নেই, যে যথাযথ সম্মান, গুরুত্ব নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব পেয়েছেন বা পাচ্ছেন। ’৪৯-এ যেদিন আওয়ামী লীগ গঠিত হয় সেদিন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও জননেতা শামসুল হক বাদে বাকি সবাই ছিলেন শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের তুলনায় নবীন। আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের দিন বিনা নোটিশে সে সমাবেশে শেরেবাংলা গিয়েছিলেন। তাকে কী যে সমাদর করা হয়েছিল, কী যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল—তা কল্পনার সীমারও বাইরে। যা নিয়ে আজ এত তোলপাড় সেই মুক্তিযুদ্ধে নিজে মুক্তিযুদ্ধ করেছি এবং দেখেছি। ’৭০-এর নির্বাচনের পর বাংলাদেশের কাক-পক্ষীরাও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়েছিল। সেখানে সব ছিল। পি.ডি.পি. মুসলিম লীগ ছিল, নেজামে ইসলাম ছিল, এমনকি এখনকার নিন্দিত জামায়াত, কেউ বাদ ছিল না। আন্দোলন করে করে আমরা যখন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলাম তখন মুসলিম লীগের অনেক প্রবীণ নেতা হুট করে সভায় এসে গেলে তাদের সম্মান করতে করতে আমাদেরই জায়গা থাকত না। কতদিন থেকে বলছি, রাজাকার ছাড়ুন, স্বাধীনতা বিরোধীদের ত্যাগ করুন, প্রাপ্য শাস্তি তাদের পেতে দিন, কেউ শুনল না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জগতের সব বুদ্ধি রাখেন। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে যেদিন খালেদা জিয়ার বিএনপি হটাও আন্দোলনে প্রেস কনফারেন্স করলেন, সে সময় আমি আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য ছিলাম। ওয়ার্কিং কমিটির উপস্থিত ৩৪ জনের মধ্যে ৩১ জন আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু তারপরও নিজামী, কাদের মোল্লার সঙ্গে প্রেস কনফারেন্স করে তিনি খালেদা জিয়া বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন। এমনকি অনেক বাজে কথা বলেছিলেন। সেদিন যদি জামায়াত আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চড়ে খালেদা জিয়াকে হটাতে না পারত তাহলে বিএনপির ঘাড়ে চড়ে রক্তের দামে কেনা পতাকা রাজাকারের গাড়িতে উড়ত না। কি প্রয়োজন ছিল বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে গোলাম আজমের দোয়া চাওয়ার? এগুলো তো ইতিহাস। এগুলো বদলাব কী করে? বর্তমান গণজাগরণের যেমন ভালো দিক আছে, কোনো খারাপ দিকও কি নেই? শুরুতেই বলেছি নেতৃত্ব-কর্তৃত্বহীন আন্দোলন একেবারে অর্থহীন। কেউ কাউকে মানবে না, কেউ কারও কথা শুনবে না তাহলে সমাজের নিরাপত্তা কোথায়? এ যদি সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত জনতার হয়, তাহলে নেতৃত্ব আর কর্তৃত্ব কার? আর তলে তলে যদি মহাজোটের হয় তাহলে সাজেদা চৌধুরীর মতো অমন শ্রেষ্ঠ নারী মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত, অপমানিত, অপদস্থ হবেন কেন? গণজাগরণের মঞ্চ তো মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চ। দলমতের ঊর্ধ্বের মঞ্চ। রাজাকারের ফাঁসি চাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কোথায়? রাজনীতিকদের সম্মান কোথায়? যতকাল রাষ্ট্র থাকবে ততকাল রাজনীতি থাকবে। যা গ্রামের অক্ষর-জ্ঞানহীনেরাও বুঝে, আর ব্লগাররা বুঝে না, তা কি হয়? আর আমি যে যাব কিন্তু কী করে যাব? আমি যে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী! রাজাকার হয়ে রাজাকারের ফাঁসি চাই কী করে? সচেতন নাগরিকরা একজনও কি বলেছে, কাদের সিদ্দিকীকে রাজাকার বললে স্বাধীনতাকে অপমান করা হয়? কেউ বলেনি। রাজনীতির যেখানে প্রবেশ নিষেধ সেখানে গণস্বার্থের গ্যারান্টি কোথায়? আর রাজনীতিকদের এত খেলো কে করেছে? যদি বলি দুই দলের দুই প্রধান নেত্রী এতে সমভাবে দায়ী, কী জবাব দেবেন তারা? শত শত ফোন আসছে। কেউ কেউ বাড়ি পর্যন্ত ছুটে এসেছে, শাহবাগে যেতে হবে যাওয়া উচিত। কিন্তু কী করে যাই? নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর মতো শহুরে যোদ্ধা যখন মাতাব্বর তখন ওরকম ধনী যোদ্ধার সমাবেশে আমরা নগণ্যরা যাই কী করে? আমি ভীরু, কাপুরুষ, দালাল জেনারেল শফিউল্যাহকে একেবারেই পছন্দ করি না। দেশের মানুষ এক সময়ের হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মন্ত্রী এ.কে. খন্দকারকে শাড়ি পরা কাজের বুয়ার চেয়েও নিম্নমানের মনে করে। তারপরও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার হিসেবে তাদের সম্মান আমার কাছে সম্রাটের চেয়ে বেশি। তারা কি মর্যাদা পেয়েছেন সেখানে? তাদের কি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে? আর ওই মঞ্চ কী বলে? অত আলগা বাঁধনে যুদ্ধ হয়? অটুট বাঁধন কোথায়? রসুনের কোয়া যখন খুলে বা ছুটে যায় তখন ঝরঝর করে সব ছড়িয়ে পড়ে। বেঁধে রাখার নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব কই? আর একদিনে তো সব হবে না। দূর থেকেও তো জনতার আন্দোলনকে সমর্থন করা যায়। আমরা না হয় তাই করলাম। মাত্র কয়েক বছর আগে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে মোটামুটি সুগঠিত একটি আন্দোলন হয়েছিল। বিরোধী দলের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বাড়িতে বসে আলাপ-আলোচনা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আজমকে ফাঁসিযোগ্য অপরাধী বলে সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। তখন ছিল বিএনপি সরকার। তারা ফাঁসি দেবে কেন? কী দায় পড়েছে তাদের? বরং তারা তাকে জোটে নিয়ে দ্বিতীয়বার দুর্দান্ত প্রতাপে ক্ষমতায় এসেছিল। ফাঁসির দায় সরকারের উপর চাপানোর পর মানুষ বড় আশা করে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল। কই সেদিন তো আওয়ামী লীগ ফাঁসি কার্যকর করেনি? বরং ১৫-১৬টি আসন নিয়ে জামায়াত দুর্দান্ত প্রতাপে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জাহানারা ইমামের করুণ মৃত্যু আমি কি দেখিনি? আজ যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছে তারা আন্দোলন যাতে বেশিদূর যেতে না পারে, তিনি যাতে বিকল্প নেতা হয়ে না যান তার জন্য কত ষড়যন্ত্র করেছেন। সে তো কারও অজানা নয়।
এই তো সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলে তোফায়েল আহমেদের মতো নেতাকে এতিমের মতো বসে থাকতে হয়েছে। যে ভ্রষ্ট কমিউনিস্ট লেনিন প্রেসিডিয়ামে স্থান পেয়েছেন তিনি বলেছিলেন, ‘এই তোদের বঙ্গবন্ধুকে টুকরো টুকরো করলাম।’ বঙ্গবন্ধুর জীবিতকালে যিনি ছাগল-ভেড়া-গরু-মহিষের চামড়া দিয়ে জুতো পরতেন না, সব সময় বঙ্গবন্ধুর চামড়ার জুতো পরতেন, ডুগডুগি বাজাতেন, তিনি এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যার খুবই আস্থাভাজন প্রিয় মহামন্ত্রী। দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে যেভাবে কথা বলেন, বাংলার মানুষ এখন ওসব দাঁত খিঁচানি থেকে মুক্তি চায়। তারই আলামত শুরু হয়েছে শাহবাগের গণমঞ্চে। আমি আন্তরিকভাবে এর সফলতা কামনা করি। এ আন্দোলন কেউ বিপথগামী করতে চাইলে সর্বোতভাবে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করব। কিন্তু আবার রাজাকারের ফাঁসি চাইলেও জননেত্রী না বলে বসেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে এসব হচ্ছে! কারণ তিনি তো সবকিছুতেই যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকানোর অজুহাত খোঁজেন। এভাবে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় বেশি সময় থাকা যায় না। এর একটা এসপার ওসপার হওয়াই দরকার। কিন্তু রাজনীতি বিবর্জিত নেতৃত্ব কর্তৃত্বহীন কোনো আন্দোলন অতীতে সফল হয়েছে তার নজির কোথায়? সেজন্য অবশ্যই ইস্পাতকঠিন সুদৃঢ় নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। সংগঠন এবং নেতা থাকতে হবে। বেশি সম্মান পাওয়ার জন্য কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আল্লাহ আমাকে প্রচুর দিয়েছেন। হঠাত্ কিছু পেতে চাই না। হবু চন্দ্র রাজার গবু চন্দ্র মন্ত্রী হওয়ার কোনো বাসনা নেই। দান করা নেতৃত্বের শখ কোনোদিনই ছিল না। জীবনে যা কিছু পেয়েছি দুঃখ-কষ্ট করে পেয়েছি। কারও দয়ার দান নেইনি। কাউকে অনুকরণ করিনি। বঙ্গবন্ধুকে পাগলের মতো ভালোবাসতাম। তাই তার আদেশ-নির্দেশ সব সময় শিরোধার্য করেছি।
জয় বাংলা আমাদের জাতীয় রণহুঙ্কার। রাম ছাড়া সীতা, লাইলী ছাড়া মজনু, রজকিনী ছাড়া চণ্ডীদাস, শিরী ছাড়া ফরহাদ যেমন, তেমনি বঙ্গবন্ধু ছাড়া জয় বাংলার কোনো মানে হয় না। যে জয় বাংলা এক সময় ছিল বাঙালির সম্পদ, বর্তমানে তা হাসিনা লীগ হাইজ্যাক করেছে। যে জয় বাংলা না বললে আমরা বুকে চাপবোধ করি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করে আজ ১৩ বছর মুক্তকণ্ঠে জয় বাংলা বলতে পারি না। সেই জয় বাংলা যখন শাহবাগের গণজাগরণ ষ্কয়ারে বারবার শুনতে পাই, তখন অবশ্যই মনটা আনন্দে ভরে উঠতে চায়। কিন্তু স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর নাম যখন একবারও শুনি না তখন মনটা বড় ভারি হয়ে আসে। 
ব্লগার রাজীব হায়দার দুষ্কৃতকারীর হাতে নিহত হয়েছে। তাতে শাহবাগ উত্তাল। এমন হওয়াই স্বাভাবিক। কোনো সতীর্থ জীবন হারালে সহযোদ্ধাদের এমন করেই বুক ফাটে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীবের বাড়ি গেছেন সান্ত্বনা দিতে। বলেছেন, ‘এদেশে জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার নেই।’ আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে তার মুখে কথাটি মানালেও, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানায় না। মানুষ শঙ্কায় আছে এসব করে গণতন্ত্রকে হত্যা করতে কেউ কৌশল আঁটছেন কিনা! বয়স তো আর কম হলো না, এখন যাওয়ার সময়। যে সময় মানুষ লোভে ডুবে থাকে, চোখে রঙিন চশমা পরে তখনই মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য মনে করেছি। আজ মরণের ভয় কী? তাই আত্মার তাগিদেই কথাগুলো বলছি। শুধু পশুর মতো বেঁচে থাকার জন্য ঈমান আমান সবকিছু কেন বিসর্জন দেব। ১৪ তারিখ টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলাম। মাওয়ার ওপারে ফেরি ঘাটে নামতেই ৩-৪ জন বৃদ্ধ বড় উদ্বেগ নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘বাবা, নামাজ পড়তে মসজিদে নাকি যেতে পারব না!’ আমি থমকে গিয়েছিলাম। বুক ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মানুষের এই শঙ্কা নিয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই। আওয়াজ উঠেছে, ইসলামী দল বাতিল করতে হবে। কিন্তু হিন্দুর দল থাকবে, খ্রিস্টানদের দল থাকবে—মুসলমানের দেশে মুসলমানের দল থাকবে না—কেমন সব আজব কথা! যারা ধর্মকর্ম মানে না, তারা তাদের মতো থাকুন। যাদের আল্লাহ আছে, রাসুল আছে তাদের কেন এত গালাগাল। ব্লগার রাজীব মারা গেছে, তার জানাজার যদি দরকার হয় তাহলে কেন একটা পবিত্র স্থানে জানাজা করা হলো না, শাহবাগ চত্বরে কেন? এক নাগাড়ে ১২ দিন জনসমাগম হলে পায়খানা, পেশাব, থু থু ফেলে জায়গা কি নোংরা করা হয়নি? নোংরা জায়গায় নামাজ চলে না। জানাজা কোনো মশকারি নয়, জানাজা নামাজ ফরজে কেফায়া, চার তকবিরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। কোন সে টেডি ইমাম তিন তকবিরে নামাজ শেষ করল? নামাজ পড়বেন অজু করবেন না, ক’জন ওখানে অজু করতে পেরেছিল? নারী-পুরুষ, হিন্দু, মুসলমান একসঙ্গে জানাজা হয়? হয় না। কেন অমন হলো? আপনাদের এত সামর্থ্য, এত ক্ষমতা—জায়গাটা একটু ঝাড়পোছ করে নিতেন, দয়া করে সবাই অজু করে নিতেন। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের জানাজা থেকে আলাদা করতেন। যত আধুনিকই হন পবিত্র ইসলামে পুরুষের পাশে কোনো নারীর অবস্থান অনুমোদন করে না। তুমুল জোয়ার চলছে, তাই কেউ কথা বলে না। অনেক মুসলমানেরও কেবলা ঠিক নেই, ইমান দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমার রাজনৈতিক পিতা বঙ্গবন্ধুর বাড়ির মসজিদের কেবলাও ভুল—উত্তর-পশ্চিমে। যতক্ষণ বেঁচে আছি কেবলা নিয়ে বাঁচব, একচুল নড়চড় হতে দেব না। মুক্তিযুদ্ধের সময় শিয়ালের মতো পালাইনি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ইঁদুরের গর্তে লুকাইনি। এত বছর বলে এসেছি, যা খুশি তাই করবেন তা হতে পারে না। আজ জনতা জেগেছে, বাচ্চা ছেলেগুলোকে নষ্ট করতে চাচ্ছেন কেন? ভ্রষ্ট কমিউনিস্টের বাংলাদেশে ঠাঁই হবে না। মাঝেসাজে তারা চমক দেখাতে পারেন। আল্লাহ-রসুলে বিশ্বাস করেন না আবার জানাজা পড়তে গেলেন কেন? তাও আবার চার তকবিরের জানাজা তিন তকবিরে পড়াতে গেলেন? এজন্য আর কেউ যদি প্রতিবাদ না করে না করুক, আমি প্রতিবাদ করছি, নিন্দা করছি। এত বড় একটা জাগরণ, কিছু লোক তাদের স্বার্থে পরিচালিত করতে চাচ্ছে—এটা হতে দেয়া যায় না। শাহবাগ থেকে কেন কথা উঠবে আসিফ নজরুল, পিয়াস করীম, মাহমুদুর রহমানকে হত্যা করা হবে—তারা এমন কী করেছেন? সত্য কথা বললে কেন এত আঁতে ঘা লাগবে? ’৭১-এর রাজাকার ও তার দোসররা হত্যা করেছিল, আজও তার বিচারের দাবিতে জনতা সোচ্চার। আপনারা কাউকে সঙ্ঘবদ্ধভাবে হত্যা করলে তার বিচার হবে না? নিশ্চয়ই হবে।

ইসলাম বিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে বজ্র কণ্ঠে আওয়াজ তুলুন

০১। ইসলাম বিরোধী ব্লগিং -------- বন্ধ কর , করতে হবে
০২। ইসলাম বিরোধী প্রচারনা -------- বন্ধ কর , করতে হবে
০৩। সোশাল মিডিয়ার অপব্যাবহার -------- বন্ধ কর , করতে হবে
০৪। ইসলাম বিরোধী সাইবার ক্রাইম -------- বন্ধ কর , করতে হবে
০৫। ইসলাম বিরোধী রাজনীতি -------- বন্ধ কর , করতে হবে
০৬। ইসলাম বিরোধী ওয়েবপেইজ-------নিষিদ্ধ কর , করতে হবে
০৭। ধর্মদ্রোহী ব্লগার -------- হুসিয়ার হুসিয়ার
০৮। ইসলাম বিরোধী ব্লগার -------- হুসিয়ার হুসিয়ার
০৯। ইসলাম বিরোধী ব্লগারদের-------- বিচার চাই বিচার চাই
১০। নাস্তিক মুক্ত বাংলাদেশ --------- গড়তে হবে , গড়তে হবে
১১। ব্লগিং এর নাম দিয়ে --------  নাস্তিকতা চলবেনা
১২। মুসলিম দেশে নাস্তিকতা -------- চলবেনা চলবেনা
১৩। বাংলাদেশে নাস্তিকতা -------- চলবেনা চলবেনা
১৪। ইসলাম নিয়ে ছিনি মিনি -------- চলবেনা চলবেনা
১৫। নাস্তিকদের আস্ফালন -------- সহ্য করা হবেনা
১৬। নাস্তিকদের কবল হতে ------- বাংলাদেশকে রক্ষা কর
১৭। নাস্তিকতার থাবা হতে ------ বাংলাদেশকে মুক্ত কর
১৮। নাস্তিকদের দখল হতে------ মিডিয়া গুলো রক্ষা কর
১৯। সাহাবাগের নাস্তিকদের ------ বিচার কর করতে হবে
২০। বিচারের নামে ষড়যন্ত্র ------- চলবেনা চলবেনা

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

মতবিরোধ সত্ত্বেও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে চাই ইসলামপন্থীদের ঐক্য


মতবিরোধ সত্ত্বেও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে  চাই ইসলামপন্থীদের ঐক্য
মুহাম্মদ আমিনুল হক

যখন থেকেই এই জগত্ সংসার শুরু তখন থেকেই শুরু মতের অমিল বা চিন্তার ভিন্নতা। আল্লাহ যখন চাইলেন এই দুনিয়ায় মানুষ প্রেরণ করবেন তখন ফেরেশতারা দ্বিমত পোষণ করে বসলেন এই বলে যে, হে খোদা! আমরাই তো তোমার ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য যথেষ্ট, আবার মানুষ কেন? আদমপুত্র হাবিল-কাবিলের মধ্যে চিন্তার অমিল ছিল। বিয়ের প্রশ্নে হজরত আদমের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তারা। সেই পুরনো যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষে মানুষে মতবিরোধ চলে আসছে। এই মতপার্থক্য অবধারিত। এর থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। বলা হয়, ‘মৃতরা মতবিরোধ করে না, যেখানে জীবন আছে সেখানে মতদ্বৈধতা আছে।’
আল্লাহতায়ালা আমাদের বহু রূপে, বহু গুণে সৃষ্টি করেছেন। এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির মধ্যে অনেক ব্যবধান রেখেছেন। সেই ব্যবধান চিন্তার, সেই ব্যবধান রুচিবোধ ও মননের। কিন্তু তারপরও তিনি আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন আমাদের স্বার্থেই। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে ঐক্যবদ্ধভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (সুরা আল ইমরান : ১০৩)। অথচ আমাদের মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশ এখন অশান্তির সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ জাতীয় অনৈক্য। দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছি আমরা। একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। অনৈক্য তো চোখে পড়ার মতো। আলেম-উলামা, দল-মত নির্বিশেষে সবার এই অনৈক্যকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছে ইসলামবিরোধী অপশক্তি। তারা ইংরেজদের নীতি ‘উরারফব ধহফ জঁষব্থ তথা ‘বিচ্ছিন্ন করে শাসন করো’কে গ্রহণ করে আমাদের তছনছ করে দিচ্ছে। আজ আল্লাহকে গালি দেয়া হচ্ছে। গালি দেয়া হচ্ছে আমাদের প্রিয় রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে। রাসুলের সহধর্মিণীদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে অশ্লীল কায়দায়। কোরআন, হাদিস, মসজিদ, মাদরাসা, ইসলামি রাজনীতি, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে বিদায় করার সব আয়োজন আজ সম্পন্ন। এককথায়, তাওহিদপন্থী মুসলমানের বিরুদ্ধে বাতেল শক্তি আজ একাট্টা।
এদেশের ইসলামপন্থী শক্তির এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। এদেশে ইসলামের পতাকা উড্ডীন রাখতে হলে সবাইকে আজ একতার শপথ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কীভাবে হবে এই ঐক্য? এ বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে আমরা সুন্দর একটি তত্তের সন্ধান পেয়েছি। সেই তত্ত্বটি হচ্ছে, ‘আল-ইত্তেহাদ মায়াল ইখতেলাফ’ তথা ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’। এই তত্ত্বটির কথা এ দেশে প্রথম উচ্চারণ করেছিলেন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা আযীযুর রহমান নেছারাবাদী কায়েদ সাহেব হুজুর (র.)। ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য‘র তত্ত্বটি বাস্তব রূপ দিতে তিনি এদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরেছেন। ছারছীনা, চরমোনাই, ফুরফুরা, জৌনপুরী, বায়তুশ শরফ, আটরশি, মাইজভান্ডার, তাবলীগ, জামায়াতে ইসলামীসহ অসংখ্য পীরের দরবার এবং দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী ইসলামি শক্তিকে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর এই ঐক্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালে (ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ও উহার পথ, পৃ. ০৩)। হজরত কায়েদ সাহেব হুজুর (র.) ঐক্যের যে রূপরেখা তুলে ধরেছেন অতি সংক্ষেপে তা হচ্ছে, দেশ-জাতি ও রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সব আস্তিক্যবাদী শক্তির ঐক্য, ইসলামবিরোধী তত্পরতার বিরুদ্ধে সব আলেম-উলামার ঐক্য। ভণ্ড ও জালিম নির্মূলেও সবার মধ্যে সাধারণ ঐক্য হতে পারে। এই ঐক্য হবে ইস্যুভিত্তিক। ইস্যুভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে গিয়ে কোনো দল বা মতকে তার নিজস্ব কর্মসূচি বাদ দিতে হবে না।
যুগে যুগে ইস্যুভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন যে সফলতার মুখ দেখেছে তার প্রমাণও আমরা পেয়েছি। ঈমান, ঐক্য ও শৃঙ্খলা—এ ত্রিনীতির ভিত্তিতে সংগঠিত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলেই পাকিস্তান অর্জন হয়েছিল। ১৯৫১ সালে করাচিতে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে সর্বদলীয় উলামা ও মাশায়েখ সম্মেলনে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন বলেই পাকিস্তানের ২২ দফা মূলনীতি রচনা করা সম্ভব হয়েছিল।
আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আলেমদের ঐক্য প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখেছে। ভারত সরকার যখন মুসলমানদের পারিবারিক বিধি-বিধান পরিবর্তন করতে চাইলো তখন বিশ্ববিখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা আবুল হাসান আলী আন-নাদভীর (র.) নেতৃত্বে ভারতের সব শ্রেণীর উলামা ও ইসলামি গ্রুপ একই প্লাটফর্মে এসে ‘অষষ ওহফরধ গঁংষরস খধ িইড়ধত্ফ্থ গঠন করে। যেখানে বেরলভী সুন্নী, দেওবন্দী, আহলে হাদিস এমনকি শিয়া মতাদর্শের আলেমরাও যুক্ত হয়ে সমগ্র ইন্ডিয়ার সাধারণ মুসলমানদের স্বার্থে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়ে সফল হয়েছেন। ইন্ডিয়ার সরকার মুসলমানদের ব্যাপারে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে এই ননগভর্নমেন্ট সংগঠনের মতামত নিতে হয়। পারভেজ মোশাররফ সরকারের আমলেও সমগ্র পাকিস্তানে আলেমদের ঐক্য সাধিত হয়েছিল। পাকিস্তানের ইসলামী সংগঠন জমিয়াতুল উলামার আমির মাওলানা ফজলুর রহমান সেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রধান ছিলেন। যেখানে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা অন্যান্য দল অন্তর্ভুক্ত হয়ে পার্লামেন্টে শক্ত ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছিল। সেই আমলে পাকিস্তান সরকার মাদরাসা শিক্ষা সংস্কারের নামে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিলে তাও আলেমরা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করেন। সেই প্রতিরোধ আন্দোলনে বেরলভী গ্রুপ, আহলে হাদিস গ্রুপ, দেওবন্দী গ্রুপ এবং শিয়া গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত মাদরাসাগুলোর বোর্ড ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপকে প্রতিহত করে। ২০১০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাক সংসদ, সরকার ও জনগণকে ‘ঙহব গধষধুংরধ্থ তথা এক মালয়েশিয়া কনসেপ্টকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়ে সবাইকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ২০১০ সালে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয় ‘ওয়ান মালয়েশিয়া’ কনসেপ্টকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ‘ওয়ান মালয়েশিয়া’ কনসেপ্ট সেদেশে যাদুর মতো কাজ করে। জাতি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে নেমে পড়ে। ‘আরব বসন্ত’ নামে খ্যাত মিসর ও তিউনিসিয়ার বিপ্লবের পেছনেও রয়েছে সব ইসলামি সংগঠন ও আলেম-উলামার ইস্যুভিত্তিক ঐক্যের বিশাল অবদান। আরব দেশের বর্তমান ইসলামী সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ‘না‘মালু ফি মা ইত্তাফাকস্ফনা ওয়া নাসকুতু আম্মা ইখতালাফনা’ অর্থাত্ আমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ের মিল আছে সেগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে করব আর যেসব বিষয়ে ইখতেলাফ আছে সে বিষয়ে চুপ থাকব, কেউ কারো সমালোচনা করব না।
বাংলাদেশে নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা আহমদ শফী আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই আহ্বানও যাদুর মতো কাজ করেছে। অপ্রতিরোধ্য শাহবাগিরা আত্মসমর্পণ করেছে চট্টগ্রামের তাওহিদী জনতার কাছে। অতএব নির্দ্বিধায় বলা যায়, ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’ একটি ফলপ্রসূ আন্দোলনের নাম। যেখানে সব মতের লোকজন তাদের নিজস্ব মত ও পথকে আঁকড়ে ধরে মুসলিম উম্মাহর মৌলিক ইস্যু কিংবা দেশ-জাতির প্রধান ইস্যুতে ঐক্য গড়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। এই ঐক্য হতে পারে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সব আস্তিকের, দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে কিংবা ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সব ইসলামপন্থীদের।
এদেশে তাবলিগ জামাত বিশাল একটি শক্তি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবস্থানও বেশ শক্ত। ইসলামি আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ অন্য ইসলামি দলগুলোরও কমবেশি শক্তি আছে। সব মিলিয়ে কওমী ধারার আলেম-উলামার প্রভাব খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তেমনিভাবে ছারছীনা, ফুরফুরা, চরমোনাই, ফুলতলী, জৌনপুরীসহ সুফী ধারার বিভিন্ন আধ্যাত্মিক দরবারের প্রভাবও রয়েছে দেশজুড়ে। সব ইসলামি দল ও পীর সাহেবরা যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, এদেশে কোনো কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন পাস হতে দেয়া হবে না, আল্লাহ, রাসুল ও সাহাবীদের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না এবং কোনো ইসলামি দল কিংবা আলেমের ওপর নির্যাতন সহ্য করা হবে না তাহলে তা অবশ্যই সম্ভব। ইসলামবিরোধী তত্পরতা মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। কিয়ামত পর্যন্ত মতের পার্থক্য থাকবে। আমাদের উচিত এই মতপার্থক্যকে সঙ্গে নিয়েই মৌলিক বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। মনে রাখবেন, ঐক্যবদ্ধ শক্তি যত ক্ষুদ্র হোক তার বিজয় আসন্ন এবং বিচ্ছিন্ন শক্তি যত বড়ই হোক না কেন, তার পরাজয় নিশ্চিত। আল্লাহ আমাদের এ সত্যটুকু বোঝার তৌফিক দিন। আমিন!
লেখক : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও কলামিস্ট